Friday, April 26, 2024

চুরির অভিযোগে নারীর মাথার চুল কর্তন ঘটনায় তোলপাড়: ঘটনায় জড়িতদের আটক

সামান্য কয়েকটি পিয়াজ ও কাঁচা মরচি চুরির অভিযোগ তুলে এক নারীর উপর অমানুষিক নির্যাতন ও মাথার চুল কেটে দিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ঘন্টার পর ঘন্টা গাছের সাথে বেঁধে তাকে নির্যাতন করা হয়। ৬ নভেম্বর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির দোগাছিয়া গ্রামে। ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ফাঁড়ি পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে থানায় নিয়ে গেছে। নির্যাতিত নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে।
তথ্য মিলেছে, দোগাছিয়া এলাকার এক নারী ওই রাতে পাশের মনছুরের বাড়িতে যান নাতনীর জন্য তেল পড়া আনতে। এ সময় মুনছুরের ছেলে আলামিন ও জাহিদুলের ছেলে রিয়াদ হোসেন তাকে চোর বলে আটক করে। আলামিনের দাবি, ওই নারী তাদের রান্না ঘর থেকে কয়েকটি পিয়াজ ও কাঁচা মরিচ চুরি করে। চুরির অভিযোগে আটক থাকা নারীর স্বামী জানান, আটকের পর তার স্ত্রীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারপিট করতে থাকে কয়েকজন। পরে তার মাথার চুল কেটে দেয় তারা। ঘন্টার পর ঘন্টা তাকে বেঁধে মারপিট করা হলেও তাকে উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসেনি বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী নারী জানিয়েছেন, একই গ্রামের কলিম গাজীর ছেলে হারুন, তার স্ত্রী লাবনী বেগম, মুনছুর আলীর ছেলে আলামিন ও তার স্ত্রী কেয়া খাতুন, তার বড় ভাবি সীমা বেগম তাকে আটকে রেখে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে পাশের বাড়ির জাহিদুলের স্ত্রীর সহযোগিতায় তার মাথার চুল কেটে দেয় অভিযুক্তরা।
ভুক্তভোগীর ভাইপো জানিয়েছেন, সামান্য মিথ্যা চুরির অভিযোগ এনে অভিযুক্তরা তার ফুফুকে যেভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা মারপিট ও নির্যাতন করেছে তা অমানবিক। তিনি আরো জানান, অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ৭ নভেম্বর ফুফুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই সেলিম হোসেন জানিয়েছেন, লোক মুখে ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থল এলাকায় যান তিনি। পরে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। ঘটনায় জড়িত ৫/ ৬ জনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি চলছে। ভুক্তভোগী নারীর পরিবারের পক্ষে থানায় একটি মামলা দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছে।
চুড়ামনকাটি ইউপি চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন জানিয়েছেন, চুরির অপবাদে একজন নারীকে এভাবে মারপিট ও নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থী। তিনি দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, একজন মানুষ অপরাধ করলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করতে পারতো। কিন্তু চুরির অভিযোগে একজন নারীর সাথে যা করা হয়েছে তা জঘন্য।
রাতদিন সংবাদ/আর কে-১৬
- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত