‘মা আমাকে মাফ করে দিও। আমাকে ফাঁকা মাঠে ফেলে দিয়ে এসো। পুকুরে ফেলে দাও। আমি আর বাঁচবো না। তোমার চার ছেলে, একটার দাবি ছেড়ে দিতে পারবা না মা’ যন্ত্রণা শুরু হলে এভাবে বলছে ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত টগবগে এক তরুণ । তার এসব কথা শুনে উপস্থিত লোকজন চোখে পানি ধরে রাখতে পারছে না। তিনমাস আগেও ইমরান স্বাভাবিক সব কাজ করেছে। বলছিলাম খুলনার বিএল কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ইমরানের কথা । ইমরান যেমন মেধাবী ছিল, তেমনি ছিল খেলাধুলায়ও পটু। তিনমাস আগেও সে ছিলো প্রাণ চঞ্চল। আর এ তিনমাসের ব্যবধানে ইমরান আজ মৃত্যুর প্রহর গুণছে। মরণব্যধী ক্যান্সার তার সারা শরীরে বাসা বেঁধে়ছে। ইমরান খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার সাতহালিয়া গ্রামের মাজেদ গাজীর ছেলে।
ইমরানের খালাতো ভাই সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি এম.আইয়ুব জানান, মাস তিনেক আগে ইমরানের বারবার জ্বর আসতে থাকে । সাথে ছিল গলায় ব্যথা। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করিয়ে কাজ না হওয়ায় খুলনার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করার পর ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। পাসপোর্ট ভিসা না পাওয়া পর্যন্ত সেখানেই রাখা হয়।
ভিসা পাওয়ার পর ইমরানকে পাঠানো হয় ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে। সেখানে ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আশার আলো দেখিয়েছিল। আমরাও আশায় বুক বেধেছিলাম। কিন্তু একটি কেমো দেওয়ার পর সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গেল। সমস্ত শরীর পুড়ে গিয়ে ঘা হয়ে যায়। ডাক্তাররা কেমো দেওয়া বন্ধ করেন। অবস্থা এমন পর্যায়ে যায় যে বিমান কিংবা ট্রেনে করে আনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। পরে মঙ্গলবার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ইমরানকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। তিনি সকলের কাছে ইমরানের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
- Advertisement -