Sunday, May 5, 2024

কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মন্নু ব্রেন ষ্ট্রোকে আক্রান্ত

- Advertisement -

মোঃ হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের এক সময়ের তুখোর যুবলীগের নেতা ও কালীগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মন্নু ব্রেন ষ্ট্রোক করে দীর্ঘদিন ধরে আছেন শয্যাশায়ী। মনিরুজ্জামান মন্নু কালীগঞ্জ পৌর সভার আড়পাড়া গ্রামের মৃত গোলাম নবী বিশ্বাসের পূত্র। রাজনীতির পাশাপাশি পেশা হিসাবে ঠিকাদারি সহ কালীগঞ্জ কোটচাঁদপুর রোডের নতুন বাজারে তার ছিল সৈকত ইঞ্জিনিয়ারিং একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সকলের প্রিয় মিষ্টভাষী সেই মানুষটি ব্রেন ষ্ট্রোক করে আজ সে বড়ই অসহায়।

দীর্ঘ চিকিৎসায় খরচ হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা। বর্তমানে চিকিৎসা করাতে হিমসিম খাচ্ছে তার পরিবার। সংসার জীবনে মনিরুজ্জামান মন্নুর দুই ছেলে। বড় ছেলে সৈকত (২৬) ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। আর ছোট ছেলে শিহাব (২২) ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞানের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

মন্নু দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকায় চরম কষ্টে মৃত্যুর প্রহর গুনছে প্রতিটা মূহুর্ত। সেই তুখোর যুবলীগ নেতার খোঁজ নেননা কেউ। মাঝে মধ্যে খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি সহযোগীতা করেন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার এবং পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। তাছাড়া আর কেউ তার খোঁজ রাখেন না। মনিরুজ্জামান মন্নুর রাজনীতির শুরুটা ছিলো ১৯৮৫ সালের দিকে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিকী ঠান্ডুর হাত ধরে। তিনি শুরুতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। পরবর্তিতে ১৯৯৬ সালে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রায়ত আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মান্নানের সাথে আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সাথে দলের দায়িত্ব পালন করেন। এবং ঐ বছরেই পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড (আড়পাড়া শিবনগর আংশিক) কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে জয়যুক্ত হয়েছিলেন।

রাজনৈতিক দুরদর্শিতা, দক্ষতা ও সাহসিকতায় অল্পদিনেই আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অঙ্গনে মন্নু ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন। আ.লীগের দুঃসময়ে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জামাত বিএনপির হামলা ও মামলার শিকার হয়ে পালাতক জীবন যাপন করেছেন দীর্ঘ বছর। স্বৈরাচারী এরশাদ হটাও আন্দোলনে সামনে থেকে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

অনেকটা আক্ষেপের সাথে মনিরুজ্জামান মন্নু বলেন, আমার দুঃসময়ে একমাত্র ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনার এবং পৌর মেয়র আশরাফ ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক সহকর্মি এ পর্যন্ত চোখের দেখা তো দূরের কথা আমার নিকট একটা মিনিট ফোন করেও খোঁজ নেননি। আমি রাজনীতি, সমাজসেবা ও প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই নয়, হারিয়েছি সহায়-সম্পদ। এখন আমি নিঃস্ব বললে ভূল হবে না। আমার সেই আগের অবস্থা এখন আর নেই। বছর তিনেক আগে আমি ষ্ট্রোক রোগে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গুত্ব জীবন-যাপন করছি। আমি মনে করেছিলাম আমার রাজনৈতিক সহকর্মি, বড় ভাই, ছোট ভাইয়েরা আমার বাড়িতে দেখতে আসবেন। এমপি ও মেয়র সাহেব ছাড়া আমার কেউ কোনদিন দেখতে আসেনি এবং সহযোগীতাও করেননি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক সহকর্মিরা যদি একটি বার আমার বাড়িতে দেখতে আসতো তাহলে আমার কোন আক্ষেপ থাকতো না।

মনিরুজ্জামান মন্নুর সহ-ধর্মিনী বলেন, তিনি অসূস্থ হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন বিভিন্ন ডাক্তারের দেখানো হয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে গিয়াছে। এখন নিয়মিত দামি দামি ঔষুধ কিনতে হচ্ছে। একদিন ঔষুধ বন্ধ করলে মারাত্বক অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারোর সাহায্য ছাড়া ঠিকমত হাটাচলা করতে পারেন না। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে থেকে ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে ফলে উপার্জনের পথও বন্ধ। তার উপর সংসার এবং দুই ছেলের লেখাপড়া করাতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে আমাদের। তার রাজনৈতিক সহকর্মি, দল ও সমাজের বৃত্তবান মানুষ তার পাশে দাঁড়াবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন তার স্ত্রী। মনিরুজ্জামান মন্নুর সাথে কেউ যোগাযোগ বা খোঁজ খবর নিতে চাইলে ০১৭৩৩-৪০১০৬০ মোবাইল নম্বরে কল করুন।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত