Friday, April 26, 2024

এমপি রণজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগ নেতারা এক টেবিলে

- Advertisement -

১৫ই আগষ্ট ঘিরে বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রণজিৎ কুমার রায়ের বিপক্ষের সকল গ্রুপ এক মঞ্চে উঠার জন্য ঐক্যমতে পৌছেছে। একারণে আগামী সোমবার ১৫ই আগষ্টের অনুষ্ঠানে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতেতে নতুন একটি জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। যে জোট আগামী দিনে এমপি রণজিৎ রায়ের বিপক্ষে বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতা কর্মীদের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে পারবে বলে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সচেতন মহল।
একাধিক সূত্রে জানাগেছে, বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে গ্রুপিংয়ের বিষয়টি নতুন কিছু না। প্রয়াত এমপি শাহ হাদীউজ্জামানের আমলেও বাঘারপায়  একটা গ্রুপ তাঁর বিপক্ষে কাজ করতো। পরবর্তীতে রণজিৎ কুমার রায় ২০০৮ সালে এমপি নির্বাচিত হলে ধীরে ধীরে বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগের গ্রুপ রাজনীতি প্রকট আকার ধারণ করে। এক সময় প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম কাজল রণজিৎ কুমার রায়ের বিপক্ষের অংশে নেতৃত্ব দিতেন। আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী নাজমুল ইসলাম কাজলের সাথে থাকার কারণে তিনি বিদ্রোহী হিসাবেই বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুর পর নেতৃত্বের কোন্দল নিয়ে কাজল অংশে ভাঙ্গন ধরে। যার ধারাবাহিকতায় বাঘারপাড়ায় এমপি রণজিতৎ কুমার রায়ের বিপক্ষের শক্তি চার ভাগে বিভক্ত হয়। আবার অনেকেই কোন অংশে না যেয়ে নিজের মত করে রাজনীতি শুরু করেন।
স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী সূত্রে জানাগেছে, এমপি রণজিৎ কুমার রায়ের বিপক্ষে একাংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক যশোর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য বিপুল ফারাজী। প্রায়ত নাজমুল ইসলাম কাজলের সহ ধর্মিনী বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথীও একটা অংশ নিয়ে সামনের দিকে এগুচ্ছেন। এদিকে বাঘারপাড়া উপজেলা সদরের বাসিন্দা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ কুমার অধিকারি হঠাৎ করেই বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আলোচনায় উঠে এসেছেন। তিনি বাঘারপাড়ার অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি বলয় তৈরী করেছেন। যে বলয় দিয়ে তিনি এখন প্রধান আলোচানার কেন্দ্রে রয়েছেন। ফ্রি ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রফেসর ডাঃ নিকুঞ্জ বিহারী গোলদার। তিনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফকে সাথে নিয়ে গুটি গুটি পায়ে এগুচ্ছেন। পনের আগষ্ট উপলক্ষে তিনি বাঘারপাড়া ও অভয় নগরে অসংখ্যা তোরণ নির্মান করে বেশ আলোচনায় উঠে এসেছেন। তবে এসব গ্রুপ নেতা ও তাদের গ্রুপের নেতৃস্থানীয়রা সকলেই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রণজিৎ কুমার রায়ের বিপক্ষেই রাজনীতি করছেন।

দীর্ঘ দিন ধরে এ চার অংশকে এক অংশে রুপ দেওয়ার জন্য অনেকেই কাজ করেছেন। তাতে ভালো কোন ফল আসেনি। সম্প্রতি বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তি যোদ্ধা হাসান আলীর প্রচেষ্টায় এ চার অংশের নেতাদের এক টেবিলে আনতে সক্ষম হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার তারা এক মতে পৌছেছেন। গত শুক্রবার বিকালে ও গতকাল দিন ব্যাপি এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। অনুষ্ঠান সফল করার জন্য আজও সব অংশের নেতারা এক টেবিলে বসবেন। ১৫ই আগষ্টের অনুষ্ঠান তারা এক সাথে পালন করে বাঘারপাড়ার আওমীলীগ প্রিয় মানুষদের একটি নতুন বার্তা দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন স্ব স্ব গ্রুপের নেতা কর্মীদের।
আজীবন চেয়ারম্যান খ্যাত দোহাকুলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মোতালেব তরফদার, জামদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান তিব্বত, ধলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি, নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার এমদাদ হোসেন জানিয়েছে, বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দীর্ঘ দিন ধরে একনায়ক তন্ত্র চলছে। রণজিৎ রায় মনে করেন টাকা দিয়েই সব ঘাট পার হওয়া যায়, মনোনয়ন পেলেই এমপি। যে কারণে তিনি নেতা কর্মীদের নুন্যতম মূল্যায়ন করেন না। এ কারণে বাঘারপাড়ায় আওয়ামীলীগের আশি ভাগ নেতা কর্মী তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আগামী পনের আগষ্ট শোক দিবসের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটবে।
এ বিষয়ে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তি যোদ্ধা হাসান আলী জানিয়েছেন, এমপি রণজিৎ রায়ের অনিয়মের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়ার আওয়ামীলীগ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ১৫ ই আগস্ট এর বহিঃপ্রকাশ ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত