যশোরের রূপদিয়ার শাখারগাতি এলাকার হিরো মোটরসাইকেল কোম্পানির এ্যাডমিন ইনচার্জ আব্দুল মান্নান সহ দুই কর্মকর্তাকে ধর্ষণের অভিযোগে চাকরিচ্যুৎ করেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার তাদেরকে প্রথমে সাময়িক বহিস্কার করে একই সাথে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। রোববার ওই দুইজনকে চাকরীচ্যুৎ করা হয়েছে। বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই উর্দ্বোতন কর্মকর্তা ও চাকরিচ্যুৎ হওয়া কর্মকর্তা খালিদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন। এখবর শুনে শস্তি ফিরে এসেছে সাধারণ কর্মচারীদের মাঝে।উল্লেখ্য, প্রথমে ফেসবুকে পরিচয় এরপর এক গৃহবধূকে ব্লাকমেইল করে তিন বছর ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠে মান্নানের বিরুদ্ধে। এমনকি হোন্ডা কোম্পানীর রেস্টহাউজে ওই নারীকে পুরুষের পোষাক পরিয়ে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। সবশেষে নারীর পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয় মান্নান গং। এক পর্যায় ওই নারী মান্নানের হাত থেকে বাঁচতে যশোর জেলা মহিলা পরিষদের দপ্তরে হাজির হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আইনজীবী পাভেলের সাথে কথা হয় তার। এরপর সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন ওই গৃহবধু। বিষয়টি নিয়ে রাতদিন নিউজ ও যশোরের একটি মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত মান্নান ও তার সহযোগি হিসেবে খালিদকেও চাকরিচ্যুৎ করে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ যশোর জেলা শাখার লিগ্যাল এইড সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার কণা জানান, ওই গৃহবধূ তাদের কাছে এসেছিলেন। মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে মামলাসহ সকল ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো তাকে। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে যেয়ে বলেন, নানা ধরণের হুমকি ধামকি আসছে তার উপর। ওই নারী এখন তার নিজ বাড়িতেই আছেন বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে চাকরিচ্যুৎ হওয়া কর্মকর্তা খালিদ বলেন, তার কোনো দোষ ছিলোনা। তবুও তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।তিনি কোম্পানীর কাছে বিষয়টি পুনঃবিবেচনার দাবি জানান। এ বিষয়ে মান্নানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে শাখারগাতি হিরো মোটরসাইকেল কোম্পানি থেকে বিভিন্ন মালামাল চুরি, টাকা নিয়ে অদক্ষ জনবল নিয়োগ এবং ফ্যাক্টরির ভিতরের বিভিন্ন পণ্য আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবে এবার আর পার পাননি নানা অভিযোগে অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান। এদিকে, ওই এলাকার কেউ কেউ দাবি করছেন, অভিযুক্ত মান্নানের সাথে ওই নারীর প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই নারীর শ্বশুড় বাড়ী মথুরাপুর।এরপর তাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক তৈরী হয়। প্রতিনিয়ত গাড়িতে চড়ে দুর দুরন্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন তারা। বিভিন্ন হোটেলে রাত কেটেছে তাদের। স্বামী সন্তান ফেলে দিনের পর দিন তিনি থেকেছেন মান্নানের সাথে। তিন বছরের মাথায় হঠাৎ কেনো ধর্ষণের অভিযোগ আনা হচ্ছে এর পেছনেও কোনো কারণ আছে কিনা সে বিষয়টাও খতিয়ে দেখার দাবি করেন কেউ কেউ।প্রয়োজনে ওই নারীকেও আইনের আওতায় আনার দাবিও করেন তারা।
বিশেষ প্রতিনিধি