আজম খান, বাঘারপাড়া (যশোর) : বাঘারপাড়ায় আমন ধানের ক্ষেতে পোকার আক্রমণে কৃষকর দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ধানের শীষ বের হওয়ার এ সময় পাতাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পোকার আক্রমণে কালচে রঙ ধারণ করছে ধানের শীষগুলো। পাতা পচা, পাতা মোড়ানো, ফুল পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন মাঠে। ফসলের মাঠে এ রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। ক্ষেতে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে রোপা আমন মৌসুমে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৪শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে। তবে এবছর লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষও হয়েছে। উপজেলায় এবার ১৬ হাজার ৭শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৭শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, খানপুর এলাকার খয়রার বিল, বড়বিল, সনাকুড়, ধুপখালি এলাকার ভোগের বিল, বিল জলেশ্বর ও জামদিয়া ইউনিয়নের করিমপুর, ভিটাবল্যা, জামদিয়া এলাকার বিভিন্ন এলাকার মাঠে আমন ধানে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেতের ধানে শীষ বের হলেও বেশিরভাগ ক্ষেতের ধান গাছে আর কয়েকদিন পরে শীষ আসার কথা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পোকার আক্রমণ। ধানগাছ শুকিয়ে সাদা ও বাদামি রং ধারণ করছে। অনেকেই আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। তবে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ফলন না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের আশঙ্কা, সময় মতো পোকা দমন করতে না পারলে এবার আমন উৎপাদন ব্যাহত হবে। শালবরাট এলাকার কৃষক সুনিল দেবনাথ জানিয়েছেন, বিল জলেশ্বর মাঠে তিনি ৫২ শতকের সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। তবে পাতা মোড়ানো রোগে তাঁর ধান ক্ষেত অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪ বার কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন তবুও কোনো কাজে আসেনি। এ অবস্থা থাকলে ধানের শীষে কোনো দানা আসবে না। ফসলের মাঠজুড়ে এখন শুধু পোকা আর পোকা। খানপুর গ্রামের কৃষক সত্য বিশ্বাস জানান, তার প্রায় দুই বিঘা জমিতে পোকা আক্রমণ করেছে। এ পর্যন্ত তিনি তিনবার কীটনাশক ভিরতাকো স্প্রে করেও এই পোকা দমন করতে পারছেন না। একই কথা জানান কৃষক শঙ্কর বিশ্বাস, নিমাই মন্ডল। কৃষক শঙ্কর বিশ্বাস জানান, তিন তার দুই বিঘা জমিতে এ যাবত তিনবার কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। প্রতিবার স্প্রে করতে বিঘা প্রতি প্রায় সাত-আটশ’ টাকা করে খরচ হচ্ছে। কিন্তু পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষ্যা করা যাচ্ছে না। কৃষক নিমাই মন্ডল বলেন, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। তিনিও এপর্যন্ত জমিতে তিন বার কিটনাশক স্প্রে করেছেন। এছাড়া করিমপুর গ্রামের আদর্শ কৃষক আব্দুল লতিফ জানান বহু টাকার কীটনাশক প্রয়োগ করেও ভালো ফলনের আশা করা যাচ্ছে না। জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দা নাসরিন জাহান সাংবাদিকদের জানান, পোকার আক্রমনের কোন খবর তিনি পান নাই। তবে এসময় কিছু প্রজাপতির মতো পোকার আক্রমন হয়ে থাকে। কৃষকের এবিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রাতদিন ডেস্ক/জয়-১৪







