মাহফুজুল ইসলাম মন্নু, লোহাগড়া প্রতিনিধি: প্রায় তিন মাস ধরে ভেঙে পড়ে আছে লোহাগড়া পৌর এলাকার কচুবাড়িয়া -চোরখালী নবগঙ্গা নদীর উপর কাঠের সেতুটি। তিন মাস ধরে দুই পাড়ের মানুষ দুর্ভোগে ভুগছেন। এ কাঠের সেতু এক যুগ আগে নির্মান হলেও রাতের আধারে বালি কাটার ড্রেজার মেশিন নেয়ার সময় কাঠের সেতু ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। এ সেতু ভেঙ্গে যাওয়ার পর দুই পাড়ের স্কুল-কলেজের ছেলে মেয়ে ও সাধারন মানুষজন পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্য স্থলে যেতে হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন অফিসগামী এবং হাট-বাজারের লোকজনের যাতায়াতকারীদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ছাড়াও তাদের ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময়।
নবগঙ্গা নদীর সেতুর উত্তরে চোরখালী, জয়পুর ও ছাতড়া গ্রাম নিয়ে গঠিত ১ নং ওয়ার্ড। নদীর দক্ষিণে কচুবাড়ীয়া, রামপুর, শিংগা ও মশাঘুনি নিয়ে গঠিত পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড। এ নদীর দুই পাড়ের পৌর এলাকার লোকজন ছাড়াও দুর দুরন্ত থেকে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার লোকজন এ সেতু দিয়ে আসা যাওয়া করত ।এ সেতু দিয়ে পৌরসভার পশ্চিম এলাকার জনগণের যাতায়াত সুবিধার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে উত্তরের চোরখালী আর দক্ষিণের কচুবাড়ীয়া গ্রামের সোজাসুজি একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে লোহাগড়া পৌর কর্তৃপক্ষ। তাতে করে পৌরবাসী ও দুর দুরন্তের লোকজন স্বল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যায়ে পৌরকার্যালয়, উপজেলা সদর ও জেলা শহরে যাতায়াত করতেন। কিন্তু চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে বালু ব্যবসায়ীদের ড্রেজার মেশিন রাতের আধারে সেতুর নিজ দিয়ে যাওয়ার সময় অতিপ্রয়োজনীয় এ সেতুটি মাঝ থেকে ভেঙে চুরমার করে ফেলে। তারপর থেকেই চরম দুর্ভোগে পড়ে যায় সেতুর দুই পাড়ের স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারন পথচারীরা।
এখন দুইপাড়ের মানুষদের এক মিনিটের পথ এখন ৫ কিলোমিটার ঘুরে আসতে সময় লাগছে এক ঘন্টারও বেশী।এ সেতুর দুই পাড়ের পথচারীদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি দেখতেও আসেনি পৌর কর্তৃপক্ষ, এমন ভাষা তাদের।
কচুবাড়িয়া গ্রামের শ্যাম সুন্দর পাল বলেন, ব্রিজটা ভেঙে যাওয়ার পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে শহরের যেতে হয়। এতে আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি তেমনি সময়ও নষ্ট হচ্ছে। সেতুটি দ্রুত মোরামত করে দিলে সময় বাঁচবে এবং আর্থিক ক্ষতি থেকেও রক্ষা পাব।
ধোপাদাহ গ্রামের জাহিদুল হক বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা ওপারে স্কুল,কলেজে ও মাদ্রাসায় পড়ে। তারা এখন ঠিকমতো যেতে পারছে না। এ ছাড়া নড়াইল সদর হাসপাতালে ও কোর্টে ঠিকমতো যেতে পারছি না। এক মিনিটের পথ এখন ঘুরে যেতে সময় লাগছে এক ঘণ্টা। তারপর আবার সময় মতো এখান থেকে গাড়ি পাওয়া যায় না। সেতুটি মেরামত করা আমাদের খুবই জরুরি।
লোহাগড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর বিশ্বনাথ দাস ভুন্ডুল বলেন, নবগঙ্গা নদীর উপর নির্মিত কাঠের সেতুটি প্রায় ৩ মাস আগে ড্রেজারের ধাক্কায় ভেঙে গেছে জনগনের পারাপারে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন আমি ও পৌর মেয়র সেতুটি পরির্দশন করেছি, এ সেতুটি মেরামতের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দাবি, জেলার ‘সি’ শ্রেণীর এই পৌরসভার চার ভাগের একভাগ মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য সেতুটি যেন দ্রুত মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করা হয় এবং স্কুলে, কলেজের ছেলে -মেয়েদের ও সাধারণ জনগনের অফিস-আদালত, হাটবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সংক্ষিপ্ত ভাবে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিয়ে মূল সড়কে সংযুক্ত করে দেওয়ার দাবী জানান ।
এই বিষয়ে লোহাগড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও লোহাগড়া উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মসিয়ুর রহমান বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা তিনি জেনেছেন। তবে ক্ষতিপূরণ বা ড্রেজার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারেননি তিনি।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে সেতু মেরামতের কথা ভাবছি এবং নড়াইল-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী কংক্রিটের ব্রিজের নির্মাণের কথা ভাবছি।







