দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল অসুস্থ থাকায় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন কমিশনার আহসান হাবিব খান।বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে এ রূপরেখা প্রকাশ করা হয়।আহসান হাবিব খান জানায়, রোডম্যাপ অনুযায়ী ২০২৩ সালের নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা করা হবে আর ডিসেম্বরের শেষ বা পরের বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে।তিনি বলেন, রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হলে নির্বাচন সুষ্ঠ হবে। নির্বাচন কমিশন অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন, আস্থাশীলতার ঘাটতি আছে। তবুও কমিশন শতভাগ আন্তরিকতা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করবে।
তিনি জানান, সাংবাদিকরা হলেন আমাদের চোখ, কান। আপনাদের ওপর আমরা আস্থা রাখতে চাই। অনেককে আমি জিজ্ঞেস করেছি আমাদের কাজের মূল্যায়ন কিভাবে করবেন? তারা বলেছেন ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ আগের চেয়ে ভালো। আশা করি শেষ দিন পর্যন্ত আপনারা এটা বলতে পারবেন। রোডম্যাপ গতানুগতিক নয়। কিছুটা ভিন্নতা আছে।
তিনি আরও জানান, এবার নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। এজন্য আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে আগামী বছরের জানুয়ারিতে নতুন নীতিমালা তৈরি করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।
এসময় কমিশনাররা বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন। সেজন্য আমরা কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছি। আমরা বিশ্বাস করি সব পক্ষ যদি সহযোগিতা করে তাহলে এই রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, চলতি মাস থেকে নির্বাচন পর্যন্ত কী কী কার্যক্রম চলবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে।কর্মপরিকল্পনা সংবলিত বইয়ে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ভাবনার কথা জনিয়েছে ইসি। এতে আগামী নির্বাচনকেন্দ্রিক বেশ কিছু লক্ষ্যের কথা জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
১. অংশগ্রহণমূলক (ইচ্ছুক সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নির্বাচণে সক্রিয় অংশগ্রহণ)।
২. স্বচ্ছ (নির্বাচন সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সবার অগ্রগতির জন্য কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ, পর্যাপ্তসংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীদের অবাধে সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ)।
৩. নিরপেক্ষ (সব প্রার্থীর প্রতি সমআচরণ, নির্বাচন কমিশনের অধিকসংখ্যক যোগ্য কর্মকর্তাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ, নিরপেক্ষ প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ, নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকারী কারও বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের প্রমাণ পেলে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, নির্বাচনি আইন ও বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া)।
৪. গ্রহণযোগ্য (ইসি কর্তৃক সংবিধান, আইন, বিধি অনুযায়ী সব কার্যক্রম গ্রহণ এবং যথাযথ প্রয়োগ যাতে নির্বাচনের ফল সব ভোটার ও অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়)।
৫. সুষ্ঠু (নির্বাচন পূর্ববর্তী, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূলে রাখা, প্রার্থী বা সমর্থক যেন নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করা, অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া, সব প্রার্থী যেন আচরণিবিধি অনুযায়ী নির্বাচনি প্রচার চালাতে পারেন, তা নিশ্চিত করা)।
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়রি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেক্ষেত্রে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে পরের বছর জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক







