Saturday, May 4, 2024

মণিরামপুরে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক প্রদিপ আটক

- Advertisement -

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধিঃ মণিরামপুরে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাকুরিয়া প্রতাপকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইনকে চাকুৃরি থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

শিক্ষককে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এসএসসি পরিক্ষার্থীরা শনিবার সকালে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে বিক্ষোভ করে স্কুলের জানালা-দরজাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। অভিযোগ রয়েছে বহিষ্কৃত শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইন নিজেকে রক্ষা করতে এসএসসি পরিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে ভাংচুরের এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

খবর পেয়ে সকাল ১১টার দিকে র‌্যাব-৬ এর সদস্যরা স্কুল থেকে বহিষ্কৃত শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইনকে আটক করে। প্রদীপ কুমার পাইন উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সন্তোষ কুমার পাইনের ছেলে।

উপজেলার ঢাকুরিয়া প্রতাপকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল জব্বারসহ এলাকাবাসী জানান, সহকারি শিক্ষক (গণিত) প্রদীপ কুমার পাইন বেশ কয়েক বছর যাবত ঢাকুরিয়া বাজারে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলেন দি-সাগর কোচিং সেন্টার। এ কোচিং সেন্টারের পরিচালক তিনি নিজেই। কোচিং সেন্টারে তিনিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ান।

অভিযোগ রয়েছে গত ২০ এপ্রিল বিকেলে কোচিং সেন্টারে ক্লাশ শেষে ৭ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে-শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইন যৌন হয়রানি করেন। পরে শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মায়ের কাছে খুলে বলে। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীর পিতা বাদি হয়ে প্রদীপ কুমার পাইনের বিরুদ্ধে ঢাকুরিয়া-প্রতাপকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর অভিযোগ করেন।

প্রধান শিক্ষক আবদুল জব্বার জানান, এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে প্রদীপ কুমার পাইনকে শোকজ করে বিষয়টি তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। সহকারি প্রধান শিক্ষক রমজান আলীর নেতৃত্বে টিমের অন্য সদস্যরা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বাবলু সিংহ জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পাবার পর গত বৃহস্পতিবার সহকারি শিক্ষক (গণিত) প্রদীপ কুমার পাইনকে চাকুরি থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসএসসি পরিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিমূলক হিসেবে শনিবার সকাল ১০ টায় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে শতাধিক এসএসসি পরিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ে পরিক্ষায় অংশ না নিয়ে স্কুলের মাঠে বিক্ষোভ করে।

এক পর্যায়ে পরিক্ষার্থীরা স্কুলের দ্বিতীয় তলায় পরীক্ষা কেন্দ্রের দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাংচুর করে। অভিযোগ রয়েছে নিজেকে রক্ষা করতে শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইন উপস্থিত থেকে প্রাইভেট পড়ানো শতাধিক এসএসসি পরিক্ষার্থীকে উষ্কে দিয়ে ভাংচুরের এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ভাংচুরের পর এ দিনের প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা স্থগিত করার কথা উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষক আবদুল জব্বার জানান। খবর পেয়ে সকাল ১১ টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা স্কুল থেকে বহিষ্কৃত শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইনকে আটক করে।

র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের লে.কমান্ডার নাজিউর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাইনকে আটক করা হয়েছে। মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি সার্বিক) নূর ই আলম সিদ্দিকী জানান, এ ঘটনায় শিক্ষক প্রদীপের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষার্থীর পিতা বাদি হয়ে বিকেলে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা আসাদ জানায়, র‌্যাব অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পর তাকে ধরে নিয়ে গেছে। আর থানায় একটি মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

 

 

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত