Saturday, December 13, 2025

সীমান্তে সংঘাতের পর কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে বিমান হামলা

সীমান্তে তীব্র উত্তেজনার পর প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা বাহিনী। সোমবার স্থানীয় সময় ভোরে এ হামলা পরিচালনা করা হয়।

থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর আন্তঃবিভাগ সংযোগ দপ্তরের (আইএসপিআর) প্রধান মেজর জেনারেল উইনথাই সুভারি স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কম্বোডিয়ার চং এন মা পাস এলাকায় দেশটির সেনা অস্ত্রাগারগুলোর ওপর বিমান হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে মূলত আর্টিলারি ও মর্টার মজুত ছিল, যা থাই বাহিনী ও সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছিল কম্বোডীয় সেনারা।

মেজর জেনারেল সুভারি জানান, রোববার কম্বোডীয় বাহিনীর হামলায় এক থাই সেনা নিহত এবং দু’জন আহত হন। তার প্রতিক্রিয়াতেই এই বিমান হামলা।

অন্যদিকে, পৃথক বিবৃতিতে কম্বোডীয় সেনাবাহিনীর আইএসপিআর জানিয়েছে, সোমবার ভোর ৫টা ৪ মিনিটে তাদের সেনা স্থাপনা লক্ষ্য করে থাই বিমানবাহিনী হামলা চালায়। তারা অভিযোগ করেছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে থাই বাহিনী সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে, বিমান হামলাও তারই অংশ।

বিমান হামলায় কম্বোডিয়ার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এর আগের দিন রোববার স্থানীয় সময় ২টা ১৫ মিনিটে সি সা কেত প্রদেশের সীমান্ত লক্ষ্য করে গুলি চালায় কম্বোডীয় সেনারা। এতে দুই থাই সেনা আহত হন। এর জবাবে থাই বাহিনী পাল্টা হামলা চালায় এবং প্রায় ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয় সংঘাত।

সংঘাত শেষে কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের চার প্রদেশ—বুরি রাম, সুরিন, সি সা কেত ও উবন রাতথানি থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয় স্থানীয় প্রশাসন। সিএনএনের তথ্যমতে, সীমান্ত এলাকার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে থাই সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, রোববার থাইল্যান্ড জাতিসংঘে অভিযোগ করে যে, কম্বোডিয়া গোপনে থাই ভূখণ্ডে বড় এলাকা জুড়ে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে। এর বিস্ফোরণে থাই ও চীনা নাগরিক আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়। জাতিসংঘকে বিষয়টি তদন্তের আহ্বান জানায় থাইল্যান্ড। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই রোববারের সংঘাত শুরু হয়।

সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৫ বছরের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত জুলাই মাসে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। টানা পাঁচ দিনের লড়াইয়ে দু’পক্ষের ৩২ জন নিহত ও কমপক্ষে ৩০জন আহত হন। বাস্তুচ্যুত হন অন্তত দুই লাখ মানুষ। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি ফিরে আসে।

তবে রোববারের নতুন সংঘাত ও সোমবারের বিমান হামলার পর সেই যুদ্ধবিরতি আবারও হুমকির মুখে পড়েছে।

অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০৩

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর