দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে যশোর-বেনাপোল সীমান্ত পথে স্বর্ণ পাচার বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ভারতে পাচার হওয়া স্বর্ণের অর্থ ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। তবে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করায় সম্প্রতি স্বর্ণ জব্দের পরিমাণও বেড়েছে। পাচার প্রতিরোধে কাজ করছে বিজিবির ৪৯ ও ২১ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা এবং পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।
শুধু চলতি বছরের প্রথম আট মাসে যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অভিযানে ১৫ কেজি ৫০৪ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এ সময় স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে আটক হচ্ছে মূলত বহনকারীরা, অথচ পাচারকারী চক্রের গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
সীমান্ত সূত্রে জানা যায়, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে দেশে আসে স্বর্ণের চালান। এরপর ঢাকায় নেমে ট্রেন বা বাসে করে পাচারকারীরা স্বর্ণ নিয়ে আসে যশোরে। পরে হাতবদল হয়ে তা যায় চৌগাছা, বেনাপোল ও সাতক্ষীরা সীমান্তে। নির্দিষ্ট স্থানে স্থানীয় এজেন্টদের হাতে স্বর্ণ তুলে দিয়ে তা ভারতে পাচার করা হয়।
কখনও সীমান্তের ছোট ছোট পথ, কখনও আবার আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের মাধ্যমেও স্বর্ণ পাচার করা হয়।
মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ বলেন, “পূজার আগে স্বর্ণ পাচার বাড়ে। স্বর্ণ যাচ্ছে, আর বিনিময়ে দেশে আসছে মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য। বহনকারীরা ধরা পড়লেও মূল হোতারা অদৃশ্য থেকে যাচ্ছে। প্রশাসনের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার।”
সীমান্তবাসী রুবেল হোসেন জানান, “পাচার বেড়ে যাওয়ায় সীমান্ত অপরাধীদের আনাগোনা বাড়ছে। এতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকে।”
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, “আগে চোরাচালান হতো পণ্য দিয়ে, কিন্তু এখন ট্রাক ও পাসপোর্টধারীদের মাধ্যমেই স্বর্ণ পাচার হচ্ছে বেশি। দুই দেশের চালক ও যাত্রীরা এতে জড়িয়ে পড়ছে।”
যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, “স্বর্ণ পাচার প্রতিরোধসহ যেকোনো অপরাধ দমনে বিজিবি আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ বছর এখন পর্যন্ত ১৫ কেজি ৫০৪ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার ও ১৭ জন পাচারকারী গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল হোতাদের শনাক্ত ও আটকেও চেষ্টা চলছে।”







