Friday, December 5, 2025

পেট্রাপোলে বেনাপোলের হাসানুজ্জামানের ১৫ কোটি টাকার পণ্য জব্দ

ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে বাংলাদেশে রপ্তানির অপেক্ষায় থাকা পাঁচটি ট্রাক জব্দ করেছে বিএসএফ ও ভারতীয় কাস্টমস। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য আটক করা হয়।

ভারত সরকারের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ও কাস্টমস যৌথভাবে আটককৃত ট্রাকগুলোর মালামাল খতিয়ে দেখছে। ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, এসব পণ্যের মালিক বেনাপোলের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত আমদানিকারক হাসানুজ্জামান হাসান। তার মালিকানাধীন কথিত প্রতিষ্ঠান মেসার্স জামান ট্রেডার্স এবং ভারতীয় রপ্তানিকারক মন্ডল গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, ভারতীয় কাগজপত্রে ১৬টি চালানকে মোটরসাইকেল পার্টস হিসেবে ঘোষণা করা হলেও ট্রাকগুলোতে ছিল ঔষধ, জিলেট ব্লেড, ট্রিমার, শাড়ি, ফেব্রিক্স, ইমিটেশন জুয়েলারি, মূর্তি, হাতঘড়ি, চাদর, তালা, থ্রি-পিস, জুতা, সেলুন সামগ্রীসহ নানান পণ্য। জব্দকৃত এসব পণ্যের বৈধ কোনো নথিপত্র ভারতীয় কাস্টমসের কাছে পাওয়া যায়নি।

ব্যবসায়ী সূত্র আরও জানিয়েছে, মন্ডল গ্রুপের মূল মালিক কুতুব উদ্দীন মন্ডল। তার ৫টি রপ্তানি লাইসেন্সের মধ্যে মাত্র একটি বৈধ, বাকি চারটি ভুয়া বলে অভিযোগ। মেসার্স রুহানী এন্টারপ্রাইজ, সোহানী এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ ও তাহানি এন্টারপ্রাইজ নামের এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ রপ্তানি হয়ে আসছে।

এদিকে, বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট ওমর এন্ড সন্স-এর লাইসেন্স ব্যবহার করে এই চালান ছাড় করার চেষ্টা হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এজেন্টের মালিক ইউনুস মিয়া দাবি করেছেন, তার এক আত্মীয় জাহিদ হোসেন লাইসেন্সটি ব্যবহার করে থাকে। জাহিদ হোসেন আবার দাবি করেন, ব্যবসায়ী আজিম উদ্দীন ওই লাইসেন্সে কাজ করছেন। আজিম স্বীকার করেছেন যে, তিনি হাসানুজ্জামানের পণ্য ছাড় করেন, তবে আটক হওয়া চালানটি তার ছিল না।

বেনাপোল বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, শুল্ক ফাঁকি দিতে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা অবৈধ পণ্য বৈধ কাগজপত্রের আড়ালে বাংলাদেশে আমদানি করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এর সঙ্গে কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের আইআরএম কর্মকর্তা মনিউর রহমান বলেন, “শুনেছি ভারতে একটি বড় চালান আটক হয়েছে। বিস্তারিত জানি না।”

কাস্টমস হাউসের ডিসি রাফেজা খাতুন বলেন, “এখনও বিস্তারিত হাতে পাইনি। প্রয়োজন হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

অতিরিক্ত কমিশনার শরিফুল হাসান বলেন, “বিষয়টি এখনো আমার জানা নেই।”

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর