বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে যশোরে আয়োজিত বর্ণাঢ্য বৈশাখী ফুটবল উৎসবের জমকালো পরিসমাপ্তি ঘটলো শনিবার শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচের মাধ্যমে। নাটকীয়তা, উত্তেজনা আর উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ১ নম্বর ওয়ার্ড টাইব্রেকারে ৬ নম্বর ওয়ার্ডকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
সন্ধ্যার আবছা আলোয় কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারিতে বসে থাকা হাজারো দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায় ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত। নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত ১০ মিনিটে গোলশূন্য থাকার পর ম্যাচ গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। সেখানে প্রথম ৫টি করে শটে উভয় দল ৪টি করে গোল করলেও ‘সাডেন ডেথ’-এ জয় নিশ্চিত করে ১ নম্বর ওয়ার্ড। দলের গোলরক্ষক মিথুল অনন্য দক্ষতায় দুটি শট রক্ষা করে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ নির্বাচিত হন এবং দর্শকদের হৃদয় জয় করেন।
ফাইনাল খেলায় গ্যালারির প্রতিটি আসন ভরে যায়। দুই দলের সমর্থকদের উৎসাহ-উল্লাস মাঠের উত্তেজনাকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। সেই মুহূর্তগুলো যেন ছিল ক্রীড়ার, সংস্কৃতির আর সামাজিক সংহতির এক অপূর্ব সম্মিলন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদসহ ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এই উৎসব সম্পর্কে আয়োজকগণ জানান, যশোর শহরের ৯টি ওয়ার্ডের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্ট ছিল ক্রীড়া ও সামাজিক ঐক্যের অনন্য উদাহরণ।
নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ বলেন, “আজকের এই ফাইনাল যেন ঈদের মতো আনন্দ বয়ে এনেছে যশোরবাসীর জন্য। তরুণদের বিভ্রান্ত করতে যেখানে অপসংস্কৃতির নানা ফাঁদ পাতা হয়েছে, সেখানে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তাঁর ইনোভেটিভ চিন্তা ও সৃজনশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে আলোর পথে টেনে আনছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই বৈশাখী উৎসবের মূল প্রাণ ছিলেন অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তার চিন্তা, উদ্যোগ এবং অনুপ্রেরণায় আমরা ক্রীড়া ও সংস্কৃতির মাধ্যমে তারুণ্যের মাঝে আশা ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।”
ক্রীড়াঙ্গনের এই পুনরুজ্জীবনে তাঁর নেতৃত্ব ভবিষ্যতেও যশোরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করেন আয়োজকরা।
প্রতিযোগিতায় বণার্ট্য দলে হিসেবে পুরস্কার জিতেছে এক নম্বর ওয়ার্ড। এছাড়া সাবেক ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও হকি খেলোয়াড় কাওছার আলী, মাসুক মোঃ সাথী, মরোনত্তর এস এ খান সালেহ, এমদাদুল হক সাচ্চু ও আবুল কালাম।
চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম।
চ্যাম্পিয়ন দলকে দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা প্রাইজমানি ও আকর্ষণীয় ট্রফি; রানারআপ দল পায় ২৫ হাজার টাকা। সেরা খেলোয়াড়, সেরা শৃঙ্খল দল এবং ক্রীড়াঙ্গনে অবদানের জন্য প্রাক্তন ফুটবলার ও ক্রীড়া সংগঠকদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
বৈশাখী ফুটবল উৎসব ছিল যশোরে কেবল একটি ক্রীড়াযজ্ঞ নয়—এ ছিল সামগ্রিক সামাজিক জাগরণের প্রতিচ্ছবি। এই আয়োজনে যেমন ছিল প্রতিযোগিতা, তেমনি ছিল মিলন, উদ্দীপনা এবং গঠনমূলক চিন্তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন।
আয়োজকদের দৃঢ় প্রত্যয়, অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে ভবিষ্যতে যশোর বারবার ফিরিয়ে আনবে তার গৌরবময় ক্রীড়াপরিচিতি, আর এই শহরের মাঠ-ঘাট আবারও হয়ে উঠবে তারুণ্যের প্রাণের স্পন্দন।







