শফিয়ার রহমান, মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: মণিরামপুরের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিঞ্চুপদ মল্লিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বরং তার অপকর্মের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, বিঞ্চুপদ মল্লিকের গ্রামের বাড়ি মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের গাবরডাঙ্গা গ্রামে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি গোপালপুর তহশিল অফিসে দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ঘর বিতরণে দুর্নীতি করেন। দরিদ্রদের বাদ দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর কাছে ঘর বরাদ্দ দেন, প্রতিজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে।
এ নিয়ে এলাকার ভুক্তভোগীরা একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন, তবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এছাড়া জমির খাজনা আদায়ের ক্ষেত্রেও তিনি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত।
২০২২ সালে গোপালপুর থেকে বদলি হয়ে বিঞ্চুপদ মল্লিক পার্শ্ববর্তী নেহালপুর তহশিল অফিসে যোগদান করেন। এখানেও তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে খাকুন্দি গ্রামের মৃত কিংকর সরকারের মেয়ে জয়ত্রী রানী সরকারের নামে থাকা জমি সুফল নামে এক ব্যক্তির নামে নামজারি করেন। বিষয়টি প্রকাশ হলে তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হোসেন ওই নামজারি বাতিল করেন।
সর্বশেষ, নেহালপুর ইউনিয়নের বালিধা গ্রামের নুর মোহাম্মদ গাজীর জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের বিরোধে তিনি ঘুষ নিয়ে এক পক্ষের পক্ষে প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ছোট ভাই মঈনুল ইসলাম এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিঞ্চুপদ মল্লিক সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, “সব তদন্তে যা পাওয়া গেছে, সেভাবেই প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম বলেন, “বিঞ্চুপদ মল্লিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো প্রকার দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না।”
এলাকার মানুষের অভিযোগ ও বিক্ষোভ প্রমাণ করে, এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা প্রয়োজন।







