Friday, December 5, 2025

অভয়নগরে মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে কুপিয়ে ১ জন কে হত্যা;আহত ২

বিশেষ প্রতিনিধি– অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে কুপিয়ে ঘটনা স্থলে নিহত ১ জন এবং গুরুত্বর আহত ২ জন অপর এক জন দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পেলো। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (১৯সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার মশরহাটী গ্রামে আব্দুল কুদ্দুসের চায়ের দোকানের সামনে ভৈরব ব্রিজের রাস্তার ওপর। শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় দের সাথে কথা বলে জানা যায় পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাদের ধারণা।
নিহত মতিয়ার রহমান বিশ্বাস ওরফে মতি বিশ্বাস (৪৬) উপজেলার মশরহাটী গ্রামের মৃত হাশেম আলী বিশ্বাসের ছেলে। আহত দুজন হলেন- উপজেলার বনগ্রামের মৃত মজিদ শেখের ছেলে মশরহাটী গ্রামের আবুল হোসেন বাবুর ভাড়াটিয়া মো. হালিম (৩৫) ও একই গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে মনিরুল ইসলাম লিটন (৪০)।
আহত দুজনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহত মতি বিশ্বাসের দ্বিতীয় স্ত্রী মিম খাতুন বলেন, ‘রাতের আঁধারে একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমার স্বামীসহ তার দুই বন্ধুকে কুপিয়ে মৃত নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মতি বিশ্বাসের পেটের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় রক্তাক্ত জখম তিনজনকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মতি বিশ্বাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনা স্থল থেকে দৌড়ে আত্মরক্ষাকারী মনির হোসেন বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক প্রোগ্রামে নদীর ওপারে ছিলাম। প্রোগ্রাম শেষে এলাকায় আসি এ সময় চায়ের দোকানে চা খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ শেখ পাড়া মসজিদ থেকে মাইকে বলতে শুনি নজরুল শেখ এর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। এমন সময় ডাকাত পড়েছে শুনে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমাদের মনে খটকা লাগে ঠিক এসময় দেখি কিছু মানুষ আমাদের দিকে দৌড়ে আসছে। খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে বুঝে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করি এসময় আমি সরে গেলেও আমার সাথে থাকা মতি বিশ্বাস, মো হালিম ও মনিরুল ইসলাম লিটন কে তারা ধরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে যায়।
লিটন এর স্ত্রী রাশিদা বেগম বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার স্বামীর গায়ে রক্তে ভরা তাড়াতাড়ি অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যাই সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন ডাক্তার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
পরে আমরা সিটি মেডিকেল নিয়ে আসি এখানে অপারেশন শেষ হয়েছে তবে অবস্থা ভালো না আইসিইউ এর ভিতরে রাখা হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন রোগীর অবস্থা ভালো না।
অভয়নগর থানার ওসি এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন , ‘রাতে খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মতিয়ার রহমান কে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপর দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইতি মধ্যে মতিয়ার রহমানের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর পর তার পরিবার দাফন কাজ সম্পন্ন করেন। এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দায়ের করে নাই। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর