Sunday, May 5, 2024

যশোরে মিতু হত্যার ঘটনায় মামলা, মৃন্ময়ের আদালতে স্বীকারোক্তি

- Advertisement -

যশোরে খাদিজা খাতুন ওরফে মিতু হত্যার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন মিতুর মা সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার ধানদিয়া গ্রামের নাসিমা বেগম। এদেিক, বৃহস্পতিবার ডিবি পুলিশ মৃন্ময়কে আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতে মৃন্ময় হত্যার ঘটনা স্বকিার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া জবানবন্দি গ্রহন শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আদালত ও ডিবি সূত্র জানায়, মৃন্ময় জানিয়েছেন কয়েকবছর আগে সাতক্ষীরার মন্টু মিয়ার বাগানবাড়িতে ঘুরতে যেয়ে সেখানে নাচতে দেখে মিতুকে। সেখানে পরিচয়ের পর একপর্যায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এসময় মৃন্ময় নীলফামারী থাকতেন। একপর্যায় মিতুকে গোপনে নীলফামারী নিয়ে যায় মৃন্ময়। সেখানে বিয়ে করে তারা। কয়েকমাস পর মিতু চলে আসে সাতক্ষীরা। সাতক্ষীরায় এসে সে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন শুরু করে। যা নিষেধ করে মিন্ময়। কিন্তু তা শোনেন না। এছাড়া মিতু নাচগানের সাথে সাথে বিভিন্ন সময় মদ্যপ অবস্থায় পুরুষদের সাথে হোটেলে রাত কাটাতে শুরু করে। এসব বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে গোলোযোগ হয়। এক পর্যায় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তাদের। পরে মৃন্ময় আরেক মেয়েকে বিয়ে করে নীলফামারী থাকা শুরু করে। কিন্তু মিতু নীলফামারী যেয়ে ঝামেলা শুরু করে। এসব বিষয়ে জানাজানি হলে মৃন্ময়ের স্ত্রী চলে যায়। এরপর ফের মিতুর সাথে কথা বার্তা হয় মৃন্ময়ের। একপর্যায় মিতু আর নাচগান করবে না এমন শর্তে তারা ফের মন্দিরে যেয়ে বিয়ে করে। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করে মিতু। ফের সম্পর্কে ফাটল ধরে। এরপর সাতক্ষীরা থেকে মৃন্ময় যশোরের বাড়িতে চলে আসে। যশোরে মৃন্ময়ের বাড়ির কথা জানতেন না মিতু। এরপর মিতু বিভিন্ন সময় মিন্ময়কে মোবাইল করে তার কাছে থাকা ছবি নিয়ে ব্লাকমেইল করার হুমকি দেয়। একপর্যায় মঙ্গলবার সন্ধায় মিতুকে যশোরে নিয়ে আসে। প্রথমে তারা শহরের দড়াটানায় আসে। এরপর সেখান থেকে পরিকল্পনা করে কিভাবে তারা ভালো থাকতে পারবে। মধ্যরাতে কৌশলে মিতুকে যশোরের বুকভরা বাওরের পাশে নিয়ে গলাচিপে হত্যা করে। পরে শাড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে চান্দুটিয়ার মৃন্ময়ের বাড়িতে চলে যায় মৃন্ময়।
এদিকে, খাদেজা ওরফে মিতুর মা মামলায় উল্লেখ করেছেন খাদেজার নয় বছর আগে সাতক্ষীরার একটি পরিবারের বিয়ে হয়। তার আট বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু স্বামী রফিকুল খাদেজাকে ছেড়ে দেয়ায় নাচগান করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে সে। তিনবছর আগে মৃন্ময়ের সাথে খাদেজার পরিচয় হয়। লোকমুখে শুনেছিলো খাদেজা ধর্মান্তরিত হয়েছে ও বিয়ে করেছে মৃন্ময়কে। কিন্তু এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত ছিলেন না এমনকি খাদেজাও বলেনি। মৃন্ময় বিভিন্ন সময় তার মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেত। সে নায়কা মাধবী নামে পরিচিত ছিলো। একই ভাবে মঙ্গলবার সন্ধায় মৃন্ময় ডেকে নিয়ে যায় খাদেজাকে। সর্বশেষ রাত ১০টায় মোবাইল ফোনে কথা হয় খাদেজার সাথে। এসময় সে জানায় আসতে দেরি হবে। পরবর্তীতে সকালে পুলিশের মাধ্যমে লাশের খবর পান তিনি।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওর এলাকা থেকে খাদেজা খাতুন ওরফে মিতুল লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে খাদেজার কাছে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত ও ঘাতক মৃন্ময়কে আটক করে ডিবির এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজীব। পরে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তার জবানবন্দী গ্রহন শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

-রাতদিন সংবাদ

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত