লঙ্কার কাছে টি-২০ সিরিজ হারালো বাংলাদেশ। স্বাগতিক শিবিরের স্বপ্ন শেষ করে দেন নুয়ান থুসারা। ১৯ বছর বয়সী এই লঙ্কান পেসারের বোলিং স্টাইল পুরোপুরি লাসিথ মালিঙ্গার মতো। ওভারের প্রতিটি বলই ইয়র্কার লেন্থের দেয়ার চেষ্টা করেন। তার ইয়র্কার লেন্থের বলই ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। চতুর্থ ওভারে নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয় এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট তুলে নেন পরপর তিন বলে। করেন হ্যাট্রিক।
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের শেষটিতে লঙ্কার কাছে ২৮ রানে হেরেছে স্বাগতিকরা। সিরিজ জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৭৫ রান। লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিল না। শুরুতে ব্যাট করে সাত উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করে শ্রীলঙ্কা। পরে ওই রান তাড়া করতে নেমে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। হারতে হয়েছে ২৮ রানে।
বাংলাদেশের উইকেট হারানোর শুরুটা হতে পারতো প্রথম বলেই। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের করা ওই বল লিটন দাসের প্যাডে লাগে। কিন্তু আম্পায়ারস কলে বেঁচে যান লিটন। তৃতীয় ওভার শুরু করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, কিন্তু চোটের কারণে তিনি মাঠ ছাড়েন। ওভার শেষ করতে আসা ধনঞ্জয়া ডি সিলভার প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন লিটন। ১১ বলে সাত রান করেন তিনি।
বাংলাদেশের জন্য মূল আতঙ্ক হয়ে ওঠেন থুসারা। আগের দুই ম্যাচে একাদশেই ছিলেন না তিনি। মাথিশা পাথিরানার চোটে সুযোগ পেয়ে এই পেসার নিজের প্রথম ওভারেই হ্যাট্রিক করে ফেলেন তুষারা। শুরুটা হয় স্বাগতিক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে বোল্ড করে। ক্রিজে আসেন তাওহীদ হৃদয়। গুড লেন্থে পড়ে বল হালকা সুইং করে খুব জোরে আঘাত হানে হৃদয়ের স্টাম্পে। হ্যাট্রিক বলে তুষারার মুখোমুখি হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আরও একটি বল গুড লেন্থে পড়ে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রিয়াদের পায়ে লাগে। পূর্ণ হয় থুসারার হ্যাট্রিক।
নিজের পরের ওভারে এসেও উইকেট পান এই বোলার। সৌম্য সরকারের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন ইয়র্কার। জাকের আলিও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৩ বলে চার রান করে হাসরাঙ্গা ডি সিলভার গুগলি বুঝতে না পেরে এলবিডাব্লু হন। পরে রিভিউ নিলেও কাজে আসেনি।
এর আগে টস জিতে বল করতে নেমে বাংলাদেশকে আগের ম্যাচের মতো এবারও দারুণ শুরু করেন শরিফুল ইসলাম। তবে উইকেটের জন্য স্বাগতিকদের অপেক্ষা করতে হয় চতুর্থ ওভারের প্রথম বল অবধি। তাসকিন আহমেদের করা গুড লেন্থের বলে মিডউইকেটে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ১২ বল খেলে তিনি করেন আট রান। পরে ওই ওভারের বাকি পাঁচ বলে তিনটি বাউন্ডারি হজম করেন তাসকিন। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৪১ রান করে শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের পরের উইকেট এনে দেন রিশাদ হোসেন। এক প্রাপ্নত আগলে তখনও রান করে যাচ্ছিলেন কুশল মেন্ডিস। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এর মধ্যে হাসরাঙ্গার উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১৩ বলে ১৫ রান করে আউট হন তিনি। হাসারাঙ্গার সঙ্গে ৩১ বলে ৫৯ রানের জুটি ভাঙে মেন্ডিসের।
হাসরাঙ্গাকে ফেরানোর পরও উইকেট প্রান্তির উদযাপন করেননি মোস্তাফিজ। কারণ দিনটি তার জন্য সুখকর ছিল না। নিজের প্রথম তিন ওভারে ৩৪ রান দেন তিনি। সেঞ্চুরি করার সুযোগ থাকলেও কুশলকে সেটি করতে দেননি তাসকিন। তার বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন লঙ্কান ব্যাটার। ছয়টি চার ও ছয়টি ছক্কায় ৫৫ বলে ৮৬ রান করেন তিনি।
১৮তম ওভার করতে এসে একটি চার ও ছক্কা হজম করলেও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে দেন রিশাদ। পরে শেষ অবধি ১৮০ ছুতে পারেনি লঙ্কানদের রান। আট বলে ১৯ রান করে শেষ বলে রান আউট হন শানাকা। সাত রানে অপরাজিত থাকেন সামারাবিক্রমা।