Friday, April 26, 2024

হাসেম আলী হত্যা মামলায় সন্ত্রাসী নুরু মুহুরীসহ আট জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

- Advertisement -

যশোর সদরের ভাতুড়িয়া গ্রামের বৃদ্ধ হাসেম আলী হত্যা মামলায় বহুলালোচিত ঝিকরগাছার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের বহিস্কৃত পিয়ন নুরু মুহুরীসহ আট জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পিবিআই। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন পিবিআই’র পরিদর্শক শামীম মুসা। এছাড়া হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় ১০ জনকে অব্যহতির আবেদন করা হয়েছে ওই চার্জশিটে।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো, যশোর সদরের ভাতুড়িয়া গ্রামের মৃত ওসমান আলী মোড়লের ছেলে নুর ইসলাম ওরফে নুরু মুহুরী, মৃত আকবর আলী ছেলে মিন্টু আলী খান, আব্দুল কাশেমের ছেলে কবিরুজ্জামান কাজল, ইন্তাজ আলীর ছেলে জাকির হোসেন, ওয়াজেদ আলীর ছেলে আলামিন, মৃত আব্দুল লতিফ গাজীর ছেলে আসানুর রহমান আহসান, মান্নানের ছেলে বিপ্লব হোসেন বাপ্পি ও রবিউল গাজীর ছেলে ইমরান হোসেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ রাতে ভাতুড়িয়ার দাড়িপাড়ার তিন রাস্তার মোড়ে আকবর আলীর খেজুর গাছের রস খাওয়া নিয়ে আসামি মান্নান ও মিন্টুর সাথে হাসেম আলীর ছেলে আছর আলীর কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে রাতে আসামি নুরু মুহুরীর নেতৃত্বে আছর আলীর বাড়িতে হামলা করে আসামিরা। হামলাকারীরা আছর আলীকে বাড়িতে পেয়ে তাকে মারপিট করে জখম করে। এ সময় আছর আলীর পিতা হাসেম আলী তাকে উদ্ধার করতে গেলে আসামিরা প্রথমের তাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং মারপিট করে জখম করে। পরদিন সকালে হাসেম আলীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেয়ার উদ্দ্যেশে বাড়ির সামনের রাস্তায় পৌঁছালে আসামিদের বাধায় হাসাপাতালে নিত্যে ব্যর্থ হন স্বজনেরা। এ দিন বিকেলে বিনা চিকিৎসায় হাসেম আলী বাড়িতেই মারা যান। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। হাসেম আলীর ময়না তদন্ত রিপোটে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় ওই বছরের ২৯ এপ্রিল ১৮ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী লিমা বেগম। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পায়। মামলার তদন্তকালে আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় ওই আট জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। হত্যার সাথে জড়িত খার অভিযোগ না পাওয়ায় এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে মান্নান, আতিয়ার রহমান ওরফে আতি খোকা, ইসরাজুল, ইউনুচ আলী, রফিকুল ইসলাম, রাজু আহম্মেদ, সোহেল রানা, জাহাঙ্গীর হোসেন, এনামুল হক ও আব্দুল গফ্ফারের অব্যহতির আবেদন করা হয়েছে। চার্জশিটে অভিযুক্ত সকল আসামি জামিনে আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই নুরু মহুরী চাঁচড়ার রনি হত্যা মামলা এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়াও নুরুর নির্দেশে ভাতুড়িয়া গ্রামের আলতাফ, মাহিদিয়ার কাংগাল জলিল, সুতিঘাটার লাবলু, পিডিবির গাড়ি চালক মতিয়ার, চাঁচাড়ার রাষ্ট্রীয় পদক প্রাপ্ত মৎস্য ব্যবসায়ী কামালসহ একাধিক হত্যাকান্ডের নেপথ্যে তার হাত রয়েছে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।

এসব হত্যাকান্ডের পাশাপাশি অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে নুরু সিন্ডিকেটের প্রধান নুরু কোটি কোটি টাকার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির মালিক বনে গেছে। তার এই অবৈধ অর্থ বিত্ত ও অস্ত্রের উৎস খুঁজতে বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা নুরু মহুরীকে বিপুল পরিমান ঘুষের টাকাসহ একবার আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও অজ্ঞাত ক্ষমতার জোরে সে কারামুক্ত হয়ে ফিরে যায় পূর্বের পেশায়। নেতৃত্ব দিয়ে ক্যাডারদের ফের সক্রিয় করে তোলে মানুষ খুন, মাদক আর অস্ত্রের ব্যবসায়।
এছাড়া ভাতুড়িয়ার মাটি দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে নুরু বাহিনীর অর্ধশত ক্যাডার। তাদের ভয়ে টুশব্দটি করার উপায় নেই সাধারণ নির্যাতিত মানুষের। নিরবে চোখের পানিতে বুক ভাসলেও তাদের মুখে কথা বলার সাহস নেই। গ্রাম্য শালিস থেকে শুরু করে কোট কাচারী সব জায়গায় নুরু বাহিনীর ক্যাডারদের সরব উপস্থিতি। এসব ক্যাডাররা মুখে কথা বলার চেয়ে হাতের ও অস্ত্রের ভাষায় কথা বলতে বেশি পারদর্শি। চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে সরকারী দলের ডাক সাইডের নেতাদের আর্শিবাদপুষ্ঠ হওয়ার কারনে এই বাহিনীর কোন কোন ক্যাডার আর তাদের গডফাদার রাজনৈতিক বাতাবরণে গা ভাষিয়ে ধরাকে সরাজ্ঞান করছে। তাদের মুখের কথায় এই জনপদে আইন। তারা মানুষের জায়গাজমি বাড়িঘর দখল, জোর করে বাগানের গাছ কেটে নেওয়া, জমির ফসল কেটে নেওয়া, মাছের ঘের দখল করে নেওয়া, গরু ছাগল জবাই করে খাওয়া থেকে শুরু করে এহেন কোন অপরাধ কর্মকান্ড নেই যা এই বাহিনীর ক্যাডাররা করছে না।

রাতদিন সংবাদ

 

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত