Friday, May 3, 2024

চৌগাছায় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে এনজিও ব্যবস্থাপক, মাঠ কর্মীদের সংবাদ সম্মেলন

- Advertisement -

চৌগাছা প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় নিবন্ধন বিহীন ‘পল্লী অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থা (পিডো)’ নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা’র এক শাখা ব্যবস্থাপক সংস্থার এক কোটি ২০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংস্থাটির সলুয়া বাজার শাখার হিসাব রক্ষক ও দুইজন মাঠকমী বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেছেন। এর আগে সংস্থাটির আড়পাড়া বাজার শাখার ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ওঠে।

বৃহস্পতিবার বেলা বারোটায় প্রেসক্লাব চৌগাছায় এই সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পড়ে শুনান সংস্থাটির সলুয়া বাজার শাখার হিসাবরক্ষক সুমন হোসেন। এসময় এই শাখার দুই মাঠকর্মী আদুরী খাতুন এবং মুন্নী খাতুন তাঁর সাথে ছিলেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয় ২০০৯ সালে ‘পল্লী অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থা (পিডো)’ চৌগাছা উপজেলার সলুয়া বাজারে শাখা খুলে আশেপাশের চৌগাছা ও যশোর সদর উপজেলার ১০/১৫টি গ্রামে কার্যক্রম শুরু করে। সংস্থাটির সদস্য সংখ্যা তিন হাজারের বেশি। আমরা সংস্থার সলুয়া বাজার শাখার ব্যবস্থাপক চৌগাছা উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের সবুজ কুমারের কাছ থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ডিপিএস, স য়, এফডিআর ও সীমিত পরিসরে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করতাম। আমাদের সাথে ব্যবস্থাপক সবুজ কুমারের স্ত্রীর বড় বোন (জেশ্যালি) শিউলি বালাও মাঠকর্মীর কাজ করতেন। ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্তও আমরা সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনা করি। এসময় বার্ষিক ক্লোজিং কার্যক্রম চলছিল। ব্যবস্থাপক সবুজ কুমারও আমারদের সাথে ২৮ ডিসেম্বর অফিস করেন।

২৯ ডিসেম্বর সকালে অফিসে যাওয়ার সময় ব্যবস্থাপকের স্ত্রীর বড়বোন শিউলি বালা মাঠকর্মী আদুরী খাতুনের মোবাইলে কল করে বলেন, ‘দাদাকে পাচ্ছিনা। সে হয়তো কোথাও চলে গেছে। সবাই একটু তাঁকে খোজ করেন।’ এরপর আমরা মাঠকর্মীরা সবাই মিলে ব্যবস্থাপক সবুজ কুমারের গ্রামের বাড়িতে গেলে দেখতে পাই তার বাড়িতে তালা মারা রয়েছে। বাড়িতে কেউ নেই। তিনি বাবা-মা-স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এর দুইদিন পর থেকে সবুজ কুমারের স্ত্রীর বড় বোনকে মোবাইল ফোনে না পেয়ে তাঁর বাবার বাড়ি (যেখানে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকতেন) উপজেলার বাড়িয়ালী গ্রামে গেলে দেখি তিনিও স্বামী-সন্তান নিয়ে পালিয়েছেন। শিউলির বাবা-মা বাড়িতে থাকলেও তাঁরা শিউলি বা অন্য মেয়ের জামাই সবুজ কুমারের কোন সংবাদ দিতে পারেন নি।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গ্রাহকদের বিভিন্ন হিসাবের প্রায় এক কোটি ২০ লক্ষ টাকাসহ ব্যবস্থাপক পালিয়ে যাওয়ার পর সংস্থার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর বড় বোনও তাদের সাথে যোগসাজোসে পালিয়েছে। আমাদের সাত মাসের বেতন বাকি। এখন গ্রাহকরা তাঁদের টাকার জন্য আমাদের কাছে পীড়াপীড়ি করছেন।

লিখিত অভিযোগে তাঁরা বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি ব্যবস্থাপক সবুজ কুমর সংস্থার টাকায় নিজের বাড়িতে এসকেএস টয়লেটিজ নামে একটি নকল ডিটারজেন্ট পাউডার তৈরির কারখানা করেন এবং গ্রীণ পাওয়ার হোয়াইট নামে নকল ডিটারজেন্ট পাউডার তৈরি করে বাজারজাত করতেন। সে কারখানা বন্ধ করে তার মেশিনও বিক্রি করে নিয়ে সবুজ কুমার পালিয়েছেন। আপনাদের মাধ্যমে আমরা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করছি। তাঁরা আরও বলেন আমরা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পেরেছি সংস্থাটির সরকারি কোন নিবন্ধনও নেই। আপনাদের মাধ্যমে বিভিন্নস্থানে নিবন্ধনবিহীন ভুয়া এনজিও খুলে যারা দেশের মানুষকে ঠকাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির মাঠ কর্মী আদুরী ও মুন্নী এবং হিসাবরক্ষক সুমন হোসেন জানান, আমরা আগে বুঝতে না পারলেও ব্যবস্থাপক পালিয়ে যাবার পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি সংস্থাটির প্রধান, যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া গ্রামের মাসুদুর রহমান আরও আগেই সেখানে কার্যক্রম গুটিয়ে পালিয়ে গেছেন। সংস্থার কার্যক্রম না থাকলেও সবুজ কুমার বিষয়টি আমাদের জানতে না দিয়ে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিসেম্বর ক্লোজিং করিয়েছেন।

এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, এমন কোন সংস্থার নিবন্ধন যশোরে নেই। সংস্থাটির চৌগাছার আড়পাড়া শাখার বিরুদ্ধেও কিছুদিন আগে এমন অভিযোগ উঠেছে।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত