Friday, April 26, 2024

যশোরে সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানিগুলো প্রতারনা বানিজ্য, ফেসবুকে চাকুরী বিজ্ঞপ্তি

- Advertisement -

 

যশোরে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ কারী কোম্পানির আড়ালে চমকপ্রদক বেতনে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি চাকির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতানোর রমরমা বানিজ্যে মেতে উঠেছে বেশ কয়েকটি ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান। এ সকল প্রতিষ্ঠানে ফাঁদে পা ফেলে প্রতারনার শিকার হচ্ছে কলেজ পড়ুয়া যুবক-যুবতীরা। নানা রকম ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারনে এ সকল ভুক্তভোগীরা সংবাদমাধ্যমে এ সকল ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানে ব্যাপারে মুখ না খুললেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সরেজমিনে চাকুরী প্রার্থী সেজে এ সকল প্রতিষ্ঠানে পা বাড়িয়ে দেখা গিয়েছে রমরমা প্রতারনা বানিজ্য।

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মার্কেটপ্লেস। যেখানে গাড়ি,বাড়ি, আসবাপত্র ক্রয় বিক্রয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। আর এ সকল মার্কেটপ্লেসে অহরহ দেখা যাচ্ছে কোম্পানির নাম গোপন রেখে চমক প্রদক বেতন উল্লেখ করে বিভিন্ন পদে আকর্ষনীয় চাকুরির অফার। আবার এ সকল চাকুরির ব্যাপারে যোগাযোগ করতে বলা হয় পোস্ট দাতার ব্যাক্তিগত ইনবক্সে।

যশোরের ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে দেখা যায় এমন কয়েকটি চমকপ্রদক চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি। যেখানে কয়েকটির পোস্টে কোম্পানির নাম প্রকাশ করলে বাকিগুলোতে নেই কোম্পানির নাম। চাকুরির বিজ্ঞাপন দেখা যায়, যশোরের উপশহর বি ব্লকে বীর বাংলা সিকিউরিটি সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড, শংকর ছোটনের মোড় এলাকার দেশ সেফটি ফোর্স প্রাইভেট লিমিটেড। এর আগে গত ২১ সালের ১৫ই নভেম্বর যশোরে ইউনিক ফোর্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ভুঁইফোড় কোম্পানির মূল হোতা ৪ জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এর কিছুদিন অতিবাহিত হবার পর আবারও জেঁকে সেকে বসেছে আরও কিছু প্রতারণা উদ্দেশ্য নিয়ে সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানি।


অনুসন্ধানে জানা যায়, এ সকল কোম্পানি কোন রকম একটি লাইসেন্স নাম্বার দেখিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ, ট্রেনের টিটি, রিক্রুটিং অফিসার সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী বিজ্ঞাপন দিয়ে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। চাকুরীর পেছনে দৌড়িয়ে বেড়ানো যুবক যুবতীরা একবার ফাঁদে পা দিলে নিস্ব করে বিদায় দেয় এ সকল কোম্পানি। নিয়োগ দেখে কোন প্রার্থী অফিসে গেলে তাকে ৩০০ (তিনশত) টাকা পরীক্ষা ফি দিয়ে নামমাত্র লিখিত পরীক্ষা দিয়ে ভাইবার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এরপর ভাইবা দিতে বসে ভাইবা দেওয়া বদলে শুনতে হয় কোম্পানির কন্ডিশন। এরপর নিয়োগের জন্য কিছু টাকা, কোম্পানির ড্রেস তৈরির জন্য কিছু টাকা, এবং থাকা খাওয়ার জন্য টাকা চেয়ে কয়েক দফায় নেওয়া হয় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। এরপরেও চাকুরী না হলে প্রার্থীকে দেওয়া হয় নানা রকম হুমকি ধামকি। ফলে উপযুক্ত তথ্য প্রমান না থাকায় এবং ভয়ে প্রার্থীরা মুখ খোলেননা কারও কাছে। এ সকল কোম্পানির মূল উদ্দেশ্য থাকে ভন্ডামী এবং চাকরী প্রলোভন দেখিয়ে দফায় দফায় টাকা হাতিয়ে নেওয়া।

নাম প্রকাশ্যে প্রতারিত ঝিকরগাছার এক যুবক বলেন, আমি গত বছর খানেক আগে বীর বাংলা সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানিতে চাকুরির সন্ধান পেয়ে গেছিলাম। যেদিন দেখা করতে গেছি সেদিনই আমাকে তারা ৩০০ টাকা নিয়ে ইন্টারভিউ তে বসিয়ে দিলো। এরপর বাসায় চলে যেতে বললো। বাসায় আসার পর তারা আমাকে কল দিয়ে বললো, আমার চাকরী হয়েছে ১০ হাজার টাকা বেতন প্রতি মাসে। বাসা বাড়িতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরী। গার্ডের ড্রেস বানাতে তারা আমার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবী করে। আমি টাকা ম্যানেজ করে পরের দিন গিয়ে জমা দেই। এরপর থেকে তারা আমার সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগ করে না। আমি সরজমিনে দেখা করতে গেলে যার মাধ্যমে ওখানে গিয়েছি সে আমাকে হুমকি ধামকি দেয়। ফলে আমি আর ওই টাকা ফেরত পাওয়া আশা ছেড়ে দিয়েছি।

এদিকে যশোরের এক কলেজ পড়ুয়া যুবক নাম প্রকাশ করা না শর্তে বলেন, দেশ সিকিউরিটি সার্ভিসে আমি রুিক্রুটিং অফিসার হিসেবে ঢুকেছি। এখানে আমাকে বলেছে ১২ হাজার টাকা বেতন দিবে। ঢোকার পর বুঝলাম আমি যদি বাহিরে থেকে লোক এনে এখানে চাকরী হোক আর না হোক ৩০০ টাকা দিয়ে ইন্টারভিউতে এটেন্ড করাতে পারি তাহলে সেই ৩০০ টাকার থেকে কিছু কিছু কমিশন কেটে আমাকে মাসে ৩/৪ হাজার টাকা দেবে। তাও এক মাস অতিবাহিত হলেও কোন বেতনের দেখা পাওয়া যায়না। তারা ফেসবুকে চমকপ্রদক ড্রেস এবং সরঞ্জামের ছবি এবং বেতনের তালিকা চাকুরী বিজ্ঞাপন দিতে বলে আমাদের।

রাতদিন সংবাদ/এ.এন-০১

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত