বিশেষ প্রতিনিধি-যশোরের অভয়নগরে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক মহিলা ইউপি সদস্য’র বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই ইউপি সদস্য’র নাম সেলিনা আক্তার লিজা। তিনি উপজেলার শুভড়ারা ইউনিয়নের ৪,৫,৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা আসনের সদস্য।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তার লিজা হতদরিদ্র বাশুয়াড়ী গ্রামের শেখ মহব্বত হোসেনের ছেলে বৌকে মার্তৃত্বকালিন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা আট হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার ছেলের বৌ চার মাস আগে সন্তান প্রস্বাব করেছেন। কিন্তু উপজেলায় ভাতার তালিকা তার নাম অর্ন্তভূক্ত হয়নি। এ ঘটনায় মহব্বত হোসেনের স্ত্রী রেহেনা খাতুন বাদি হয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো অনেকে এধরনের মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তারাও লিখিত অভিযোগ দায়ের করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
রেহানা খাতুন জানান, ২০২৩ সালের ২০নভেম্বর ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তার লিজা তার এর ছেলের বউকে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৮ হাজার টাকা নেয়। তার ছেলে বউ এর বাচ্চার বয়স ৪ মাস হয়ে গেলেও তাদের যাঁচাই-বাছাইয়ের জন্য ডাকা হয়নি। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা তাজিন আরা মিতু নিকট খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন অনলাইনের সর্বশেষ তালিকায় তার ছেলে বৌ আপরোজা খাতুনের নাম আছে এবং ওই তালিকা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো.মিজানুর রহমানের নিকট ই-মেইলে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু উপজেলা মহিলা বিষয় কর্মকর্তার অফিসে এই আপরোজা খাতুনের নামে কোন মাতৃত্বকালিন ভাতার কার্ড হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আপরোজা খাতুনের নামের স্থানে প্রিয়াংকা সানা নামে অন্য এক জনের ভাতার কার্ড তৈরি করা হয়েছে।
প্রিয়াংকা সানার স্বামী সমির ঢালী বলেন, আমার স্ত্রী প্রিয়াংকা সানার মাতৃত্বকালিন ভাতার কার্ড হয়েছে।আমার চাচা রবিন ঢালী অনলাইনে আবেদন করে তার সকল কাগজপত্র উপজেলা অফিসে জমা দিয়েছিলো।
এব্যাপারে ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তার লিজা বলেন, আমি মার্তৃত্ব কালিন ভাতার কার্ড করার কথা বলে কারো কাছ থেকে অর্থ নেয়নি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ এ ব্যাপারে আমি উভয় পক্ষকে ডেকে নিয়ে সোমবার সকালে আমার পরিষদে সালিশে বসেছিলাম। কিন্তু উপযুক্ত প্রমানের অভাবে তার সুরহ করা সম্ভাব হয়নি।’
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজকুমার পাল বলেন, ‘এ ব্যপারে আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহি অফিসার কে এম আবু নওশাদ বলেন, ‘এ ঘটনার কোন অভিযোগ পত্র আমি হাতে পায়নি। অভিযোগ পত্র পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’