Sunday, May 19, 2024

মণিরামপুরে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইভিএমে ভোট, চিন্তায় ভোটাররা

- Advertisement -

যশোরের মণিরামপুর উপজেলা নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকি। এরইমধ্যে নির্বাচনী ময়দান সরগরম করে তুলেছেন প্রার্থীরা। তবে, ইভিএমে ভোট দেয়া নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন ভোটাররা। তারা মনে করেন, প্রথমবারের মতো এই উপজেলায় ইভিএমে ভোট হওয়ার কারণে ভোটাররা এই পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। সংশয়টা সেখানেই। তবে, নির্বাচন কর্মকর্তারা বলেছেন, এটা কোনো সমস্যাই নয়।
নির্বাচনে ইভিএমে ভোট দেয়া নিয়ে কথা হয় উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের হালিম, মনোহরপুর গ্রামের গৃহবধূ রুপা, শিল্পী, জালালপুর গ্রামের গৃহবধূ নাজমা বেগম, গোবিন্দপুর গ্রামের গৃহবধূ তহমিনা ও ভরতপুর গ্রামের কৃষক রোস্তম আলীর সাথে। তারা জানান, নতুন পদ্ধতিতে কেমন করে ভোট হবে তা তারা জানেন না। জানেন না কীভাবে ভোট দেবেন।
রোববার সকালে খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সাথে তার পরিষদে কথা হলে তিনি জানান, তার নয়টা ওয়ার্ডের অর্ধেক লোকই নিরক্ষর। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা সমাজ সচেতন, তারাই ইভিএম বিষয়ে কিছুই জানি না। তাহলে সাধারণ ও অশিক্ষিত (নিরক্ষর) মানুষ কিভাবে ইভিএমে ভোট দেয়া নিয়ে বুঝবে?’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘শহরের মানুষই ইভিএমে ভোট ঠিকমতো দিতে পারছে না। সচেতনার জন্য ভোটাররা কেন্দ্রে যায়নি। এখন আবার গ্রামে সেটি প্রয়োগ করা হচ্ছে।’
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস মার্কার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু বলেন, ‘ইভিএম একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। তবে এর সুফল পাওয়ার জন্য ভোটের আগে প্রচারণা খুব দরকার ছিল।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কল্লোল বিশ্বাস বলেন, ইভিএমে কোনোরকম দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। এখানে শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট হয় বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে, একদিন পর মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভোট। ইতিমধ্যে উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী উত্তাপ। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করেই ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন ১৩জন প্রার্থী। সকল প্রার্থী ছুটে চলেছেন গ্রামগঞ্জে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। বিজয়ের জন্যে দিচ্ছেন নানান সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস।
মণিরামপুরে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন, চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও দলের উপজেলা সিনিয়র সহসভাপতি আমজাদ হোসেন লাভলু (আনারস) ও সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন (মোটরসাইকেল)। ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে চারজন প্রার্থী। তারা হলেন যুবলীগ নেতা মঞ্জুর আক্তার (চশমা), সন্দীপ ঘোষ (টিউবওয়েল), খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হক (তালা) ও সাবেক ছাত্র নেতা শরিফুল ইসলাম (টিয়া পাখি)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন। তার হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান কাজী জলি আক্তার (কলস), আমেনা বেগম (হাঁস), সুরাইয়া আক্তার ডেইজি (ফুটবল), মাহবুবা ফেরদৌস পাপিয়া (বৈদ্যুতিক পাখা), মাজেদা খাতুন (পদ্মফুল) ও জেসমিন বেগম (প্রজাপতি)।
উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বলে এবার কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কারণ হিসেবে স্থানীয়রা বলেছেন, একদিকে প্রচন্ড গরম, অন্যদিকে, নির্বাচন হচ্ছে একই দলের প্রার্থীদের মধ্যে।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আমজাদ হোসেন লাভলু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুর্দিনে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু সকল আন্দোলন-সংগ্রামে নেতা-কর্মীদের পাশে রয়েছি। ইতিপূর্বে দুবার জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। সেই বিশ^াস ও ভালোবাসা নিয়ে প্রার্থী হয়েছি, বিধায় ভোটাররা আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করবে।’
মোটরসাইকেল মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রভাষক ফারুক হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন রাজনীতি করছি। জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ হয়নি। জনগণের সেবা করার জন্য এবার প্রার্থী হয়েছি। আর জনগণই হলো আমার বড় শক্তি। আমি আশাবাদী উপজেলাবাসী আমাকে জয়ী করবেন।’
আগামী ৮ মে (বুধবার) মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। উপজেলায় মোট ১৬৫টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। নির্বাচনে মোট ভোটার তিন লাখ ৬০ হাজার ৭৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৮২ হাজার ৪১১ জন, নারী ভোটার এক লাখ ৭৮ হাজার ৩২২ জন এবং হিজড়া ২ জন ভোটার রয়েছেন।

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত