তীব্র তাপদাহ নাকি নিম্নমানের কাচামাল ব্যবহারের কারণে যশোর নড়াইল মহাসড়কের পিচ গলে যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার যশোর নড়াইল সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখেন সংস্থার কর্মকর্তারা।
গত দুই সপ্তাহ আগে থেকে গলতে শুরু করে এ সড়কের পিচ। যা নিয়ে নানা কথা উঠে বিভিন্ন মহলে। এছাড়াও বিভিন্নন পত্রিকাও সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি নজরে আসে দুদকের। সর্বশেষ দুদক সদর দপ্তরের নির্দেশে দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল আমিনে নেতৃত্বে একটি টিম যশোর নড়াইল সড়ক পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল আমিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। পত্রপত্রিকাও লেখা লেখি হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নির্দেশে যশোর নড়াইল সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে সড়কের গলা পিচ পরীক্ষা করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত লিপিবদ্ধ করে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠাবেন বলে তিনি জানান।
এ সময় দুদকের যশোরের সহকারী পরিচালক চিরঞ্জন নিয়োগী, সহকারী পরিদর্শক সাফিউল্লাহসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, সওজ সূত্রে জানা গেছে, চার মাস আগে যশোর-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হয়। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
সূত্রটি পিচ গলার কারণ হিসেবে বলেছে, প্রায় যশোরে দেশের সর্বচ্চ তাপমাত্র রেকর্ড করা হচ্ছে। সড়কের পিচের ওপরে এই তাপমাত্রা আরও বেশি থাকে। আর কালো হওয়ায় এই পিচ সূর্যের তাপও শোষণ করে বেশি। এ ছাড়া সড়কে চাকার ঘর্ষণের ফলে উৎপাদিত তাপও এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় পিচ গলে যেতে পারে।
সূত্রটি আরও জানায়, সাধারণত সড়কে যে পিচ ব্যবহার করা হয় তা ৬০-৭০ গ্রেডের। এর গলনাঙ্ক ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অন্যদিকে, সড়ক ব্যবহারকারীদের অভিযোগ সম্প্রতি কয়েকদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু এরআগে থেকেই যশোর-নড়াইল সড়কের পিচ গলা শুরু হয়েছে। এতে করে যানবাহন চলাচলে সমস্যায় পড়ছেন চালকেরা। বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। তারা আরও বলছেন, অন্যসড়কের হাল তো এমন না । তবে, যশোর নড়াইল সড়কের পিচ এতো কেন গলছে। কেউ কেউ দাবি করেন, দুর্নীতি করতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কের কাজ করায় পিচ গলে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার দাবি, ‘যশোর-নড়াইল সড়কের যেসব স্থানে বিটুমিনের পরিমাণ বেশি পড়েছে। গরমে সেখানে বিটুমন গলে যাচ্ছে। তবে, গলে যাওয়া স্থানগুলোতে বালি ও নুড়িপাথর দেওয়া হচ্ছে। সড়কে নিম্নমানের কোনো সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।
-রাতদিন সংবাদ