Friday, May 17, 2024

ঝিকরগাছায় নবজাতক বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ আদায় !

- Advertisement -

আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা :-পৃথিবীতে গরীব হয়ে জন্ম নেওয়াটা কেনো যেনো পাপ। একটি গরীব পরিবারের রোগীকে চিকিৎসা দেওয়াকে পুঁজি করে যশোরের ঝিকরগাছা পৌর সদরের রাজাপট্টির পোস্ট অফিস সংলগ্ন সফর প্লাজার ২য় তলায় অবস্থিত সালেহা ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করার পর একটি নবজাতক (মেয়ে) বাচ্চা বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এমন নির্মম কর্মকাণ্ডে জড়িত সকলের প্রতি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে গরীব অসহায় মায়ের নিকট তার সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের নিকট দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের গরীব দিনমজুর ভ্যানচালক মাসুদ হোসেনের স্ত্রী রাহাতন বেগমের পূর্বে তিনটি সন্তান থাকার পরেও আবারো একটি সন্তান গর্ভে আসে। তখন বাজারের বিভিন্ন ক্লিনিকে কমিশনের মাধ্যমে রোগী দেওয়া এক গ্রাম্য সিষ্টার নামক দালাল চক্রের সদস্য গদখালী পটুয়াপাড়া গ্রামের বুলুর স্ত্রী শিরিনা আফরোজ তাকে (রাহাতন) দেখভাল করে এবং তার কানে ফুসমন্তর দিতে থাকে। তোমার সন্তানের নাড়িতে ঘা আর টিউমার আছে। বাচ্চা নরমালে হবে না, সিজার করতে হবে। তখন রাহাতন বলে আমার আগের তিনটা বাচ্চাতো নরমালে হয়েছে। তখন শিরিনা বলে, সিজার করার সময় সন্তানের নাড়িও কাটতে হবে। নইলে তুমিও বাঁচবে না। তখন রাহাতন ভয় পেয়ে যায় এবং শিরিনাকে বলে আমি কি করবো আমাদের পক্ষে তো অপারেশনের টাকা খরচ করা সম্ভব না। সে (শিরিনা) তখন আমাকে বলে যত টাকা খরচ হয় সব আমি ব্যবস্থা করে দিবো। বিনিময়ে তুমি তোমার বাচ্চা আমাকে দিয়ে দিবে। নিজের জীবন বাঁচাতে তার (শিরিনা) কথায় আমরা রাজি হই। এরপর সোমবার (২৮ এপ্রিল) শিরিনা আমাকে এই ক্লিনিকে নিয়ে আসে। সকাল ১০টার দিকে আমার অপারেশন হয়। আমার মেয়েটাকে আমি কোলেও নিইনি। অপারেশন রুমেই শুধু একবার তার মুখটা একটু আমাকে দেখিয়ে বাচ্চাটা শিরিনা নিয়ে গেছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল)সকালে সন্তান হারা মা তার অসুস্থ্য অবস্থায় তার স্বামীর বাড়িতে ফেরৎ গেছে বলে জানা যায়। ঘটনার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, রাহাতনের সন্তানের নাড়িতে টিউমার ও সিজার অপারেশনের জন্য ক্লিনিকে প্রায় ৪০হাজার টাকার দরকার বলে। টাকা দিতে না পারায় তাকে বাঁচ্চা দিয়ে দিতে হয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শিরিনা খাতুন বলেন, এরা গরীব মানুষ। চিকিৎসা করার টাকা নেই। তাই আমি আমার পরিচিত একজনের সাথে কথা বলে ক্লিনিক এর সব খরচ বহন করাতে রাজি করাই তার বাচ্চাটা তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। অতিদ্রুত এটা কোর্টের মাধ্যমে এফিডেভিট করে নিবো।

সালেহা ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ইসলাম বলেন, এই রোগী সিজার করানোর জন্য শিরিনা আমার সাথে ১২ হাজার টাকার চুক্তি করে। আমি শুধু তার সিজার করিয়েছি। মহিলার সন্তানের নাড়ি কাটা বা জরায়ুর কোনো অপারেশন হয়নি। বাচ্চা কেনাবেচার কথা জানেন কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি তাদেরকে বলেছিলাম বাচ্চা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তারপর যা করার করুক। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। জন্মের পরপরই বাচ্চাটা অন্য আরেকজনকে দিয়ে দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, এভাবে বাঁচ্চা কেনাবেচা করার কোনো বিধান নেই। আপনি থানার ওসির সাথে কথা বলুন। তিনি ব্যবস্থা নিতে পারেন অথবা আপনি একটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

রাতদিন ডেক্স/জয়-৪

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত