Tuesday, May 14, 2024

বেনাপোল বন্দরে ফল আমদানি কমেছে, ভোমরা বন্দরে বেড়েছে: রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

- Advertisement -

দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল। সম্প্রতি এ বন্দর দিয়ে ফল আমদানি অনেক কমে গেছে। এখন বেশিরভাগ আমদানিকারকরা ফল আমদানি করছেন সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে। হঠাৎ করে কেন আমদানিকারকরা ভোমরা বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন- এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে নানা চমকপ্রদ বিষয়।

আমদানিকারকরা বলছেন, বেনাপোল স্থলবন্দরে ডিজিটাল ওয়েট (ওজন) স্কেলের সমগ্র প্রক্রিয়া সিসি ক্যামেরার অধীনে সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত অনলাইন ওজন ¯িøপ প্রদান করা হয়। অন্যদিকে, ভোমরা বন্দরে ম্যানয়াল পদ্ধতির ওজন ¯িøপ প্রদান করা হয় । সেইক্ষেত্রে ওজনের একটা বিরাট তারতম্য ঘটানো সম্ভব হয়। সেখানে ওজন করার ক্ষেত্রে বিভিন ভাবে সুযোগ লুফে নেন অসাধু আমদানিকারকরা কেননা এই ওজন স্কেলের মাধ্যমে তারা আমদানিকৃত পণ্যের বিরাট অংকের শুল্ক ফাঁকি দিতে সক্ষম হচ্ছেন। আর এসব অনৈতিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত খোদ ভোমরা স্থলবন্দর ও কাস্টমসের কর্মকর্তারা।

ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে গত ২০ মার্চ ভারত থেকে আঙুর বোঝাই একটি ট্রাক (ডই২৫খ-৬৪৬৮) বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওজন স্কেলে ওই ট্রাকের ওজন ¯িøপ দুইটি। এর একটি হচ্ছে আমদানিকারকের জন্যে। অপরটি সরকারের শুল্ক আদায়ের জন্যে। প্রথম ¯িøপে (আমদানিকারকের জন্যে) ট্রাকের গ্রোস ওজন দেখানো হয়েছে ৪০ হাজার ৭৮০ কেজি, এবং নেট ওজন ২৭ হাজার ৮৮০ কেজি। আর সরকারের রাজস্বের জন্যে প্রিন্ট করা ওজন ¯িøপে গ্রোস ওজন দেখানো হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৮০ কেজি এবং নেট ওজন ২৫ হাজার ৯০০ কেজি। এই ওজনের মাধ্যমে কমানো হয়েছে ১ হাজার ৯৮০ কেজি বা প্রায় দুই টন। এই ১ হাজার ৯৮০ কেজি পণ্যের রাজস্ব আসে প্রায় দুই লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ৫০টি ট্রাকে এমন হলে প্রায় এক কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেনাপোল স্থল বন্দরের একজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানি অত্যন্ত কম হচ্ছে। আগে যখন প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক ফল আমদানি হতো, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩-৪ ট্রাক। এরফলে সরকার মোটা অঙ্কের শুল্ক হারাচ্ছে। অপরদিকে, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক ফল আমদানি করা হচ্ছে। আমদানিকারকরা এই বন্দর ব্যবহারের ফলে ট্রাক প্রতি দেড় থেকে দুইটনের বেশি শুল্ক ফাঁকির সুযোগ পাচ্ছে। সে কারণে তারা এই বন্দর ব্যবহারে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আর মাঝে পড়ে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গাজী এক্সিমের সত্ত¡াধীকারী গাজী শামিম উদ্দিন বলেন, গত একমাসে বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ফল আমদানি হচ্ছে না বললেই চলে। সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় বেশির ভাগ আমদানিকারক ভোমরা বন্দর ব্যবহার করছেন। এভাবে চলতে থাকলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে যে রাজস্ব আদায়ের সুনাম আছে, তা ¯øান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ভোমরা বন্দরে যে অনৈতিক কর্মকান্ড চলছে, সেগুলো অবিলম্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতির ওজন ¯িøপ বন্ধ করে ডিজিটাল ওজন স্কেল স্থাপন চালু করে সরকারের রাজস্ব আয়ের পথ বিকশিত করতে হবে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার মো. এনামুল হক বলেন, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। নিউজ হওয়ার মতো কিছুই না। ভোমরা বন্দর এখন পর্যন্ত একমাত্র স্বচ্ছ বন্দর।

-রাতদিন সংবাদ

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত