Wednesday, May 1, 2024

বিরল সূর্যগ্রহণ দেখবে বিশ্ব, ৮ এপ্রিল দিন হবে অন্ধকার

- Advertisement -

প্রায় অর্ধশতাব্দী পর বিরল সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব। সূর্যগ্রহণটি যে অঞ্চলব্যাপী দৃশ্যমান থাকবে সেখানে প্রায় ৪ কোটি মানুষের বাস, যারা এটি উপভোগ করতে পারবে। ব্রহ্মাণ্ডের এই প্রাকৃতিক ঘটনায় চাঁদ যখন পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চলে আসবে, সেসময় চাঁদের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ২৪০০ কিলোমিটার। তখন উত্তর আমেরিকায় এই বিরল সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এই সূর্যগ্রহণ খুবই বিশেষ এবং অনন্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, আগামী ৮ এপ্রিল উত্তর আমেরিকা থেকে দৃশ্যমান হবে এই সূর্যগ্রহণ। এটিই ২০২৪ সালের প্রথম সূর্যগ্রহণ। সকাল ১১টা ০৭ মিনিটে মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে প্রথম সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। আমেরিকা ছাড়াও কানাডা ও মেক্সিকো থেকে দেখা যাবে সূর্যগ্রহণ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরনের সূর্যগ্রহণ খবুই বিরল। পূর্ণ সূর্যগ্রহণের তারিখে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের মতো আকাশ অন্ধকার হয়ে যাবে। মূলত, সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে চাঁদ এলে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হয়। নির্দিষ্ট সময় সূর্যকে সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করে ফেলে এটি। এতে সম্পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হয়। ফলে আকাশ হালকা অন্ধকার হয়ে যায়। সেসময়কে ভোর বা সন্ধ্যার মতো মনে হয়।

বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণের ফলে সমগ্র উত্তর আমেরিকা জুড়ে, সমগ্রতার পথ, অর্থাৎ চাঁদ সূর্যের সামনে এসে মাটিতে তৈরি ছায়া, ১৮৫ কিলোমিটার প্রশস্ত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো-র বিস্তৃত অংশে প্রায় ১০০ মিনিট ধরে চলবে এই সূর্যগ্রহণ।

এই অন্ধকার পথে দুটি এলাকা থাকবে, দিন রাত হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হবে। অন্ধকার হয়ে যাবে। তাপমাত্রা কমে যাবে। নিশাচর প্রাণী অর্থাৎ যেসব প্রাণী রাতে সক্রিয় থাকে তারা সক্রিয় হয়ে উঠবে। কিছুক্ষণ পর আবার সূর্য বেরিয়ে আসলে প্রাণীরা বিভ্রান্ত হয়ে যাবে।

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হতে চলেছে এটি। যখন চাঁদ সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝখানে চলে তখন ঘটে পূর্ণগ্রাস গ্রহণ। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘূর্ণায়মান অন্যদিকে চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। চাঁদ যখন পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝখানে চলে যায়, তখন চাঁদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় সূর্যের আলো। সূর্য যখন আংশিকভাবে ঢাকা পড়ে যায় চাঁদের জন্য তখন তাকে বলা হয় আংশিক সূর্যগ্রহণ। অন্যদিকে সূর্য যখন পুরোপুরি চাঁদের পেছনে চলে যায় তখন তাকে বলা হয় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ।

গত সাত বছরে দ্বিতীয়বার এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ ঘটছে। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ বলতে সেই বিশেষ মুহূর্তকে বোঝায়, যেখানে চাঁদ কার্যতই ঢেকে দেয় সূর্যকে। এমনিতে আকারে চাঁদের চেয়ে ৪০০ গুণ বড় সূর্য। কিন্তু পৃথিবী থেকে চাঁদের যত দূরত্ব, তার চেয়ে সূর্যের দূরত্ব ঢের বেশি। তাই চাঁদ যখন পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে অবস্থান করে, সূর্য কার্যত ঢেকে যায়। শুধু বলয়াকারে তার বাইরের আলোকমণ্ডলের পাতলা স্তরই চোখে পড়ে পৃথিবী থেকে, যা দেখে মনে হয়, চাঁদকে ঘিরে যেন ঠিকরে পড়ছে আলো। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় পৃথিবীর উপর যে রেখা বরাবর চাঁদের ছায়া পড়ে, তাকে বলা হয় পূর্ণগ্রাসের পথ। ওই রেখা থেকেই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের গোটা প্রক্রিয়া চাক্ষুষ করা সম্ভব হয়।

বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে না এই গ্রহণ। এই সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে পশ্চিম ইউরোপ প্যাসিফিক, আটলান্টিক, আর্কটিক মেক্সিকো, উত্তর আমেরিকা কানাডা, মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাঞ্চল, ইংল্যান্ডের উত্তর পশ্চিম অঞ্চল এবং আয়ারল্যান্ডে।

মার্কিন মহাকাষ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্যানুসারে, প্রায় ৩৭৫ দিন পর পর পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সময়টা আরও বেশি হতে পারে। ১৯৭০ সালে এমন সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল উত্তর আমেরিকা থেকে। আগামী ৮ এপ্রিল তা আবার দর্শন মিলবে। এর পর ২০৭৮ সালে এ ঘটনার সাক্ষী হবেন আমেরিকানরা।

-অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত