রাতদিন নিউজ বিশেষ প্রতিনিধি-
যশোর রেলস্টেশন থেকে পাঁচশত মিটার পশ্চিমে অবস্থিত শহরের অন্যতম ব্যস্থতম মুজিব সড়কের সাথে সংলগ্ন রেলগেট এর ক্রসিং পয়েন্ট বরাবর পিচের সড়ক অংশটুকু বেহাল দশা হয়েছে।
জেলার দক্ষিণ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত এমনকি শহরের প্রানকেন্দ্রে প্রবেশ করার এই একটি রাস্তায় বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করে থাকে। বিশেষ করে পাশাপাশি তিনটি রেল-লাইন পাতের মধ্যে একটি লাইন এক ফুট উঁচু হয়ে যাওয়াতে বাকিঅংশ বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে।
যা জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য জীবন হুমকির মুখে। সর্বত্ত সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা হয়েই যাচ্ছে। ভ্যান, রিক্সা, মটর সাইকেল, সাইকেল কিংবা ভারী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, এমন কি পায়ে হেঁটে রাস্তা পার হওয়ার সময়ও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে এই রেলগেট দিয়ে দিনের বেশির ভাগ সময়ই শহরের সকল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রোগীরা ও তার স্বজনরা যাতায়াত করে থাকেন। রেলগেটের বেহাল অবস্থার কারণে গাড়ির ঝাঁকিতে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এসব দুর্ঘটনা দেখে মনে হয় মৃত্যু যেন ওঁত পেতে বসে আছে। স্থানীয় মাংসের দোকানদার কালু মিয়া জানায় গত এক সপ্তাহে এখানে দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে ৫-৬ জনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এমনকি প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ দুর্ঘটনায় পড়ে আশপাশের ক্লিনিক গুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে রেলগেট পারাপারের সময় রিক্সা ভ্যান কিংবা অন্যান্য যানবাহনও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রিক্সা চালক শফিক হোসেন বলেন, রেলগেটের অবস্থা খুবই ভয়ংকর। আমাদের জীবন ও যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। প্রতিদিন একটা দুইটা বিয়ারিং ভেঙ্গে যাচ্ছে। একটা বিয়ারিংয়ের দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। যা আয় হয় তার অর্ধেকই চলে যাচ্ছে গাড়ি মেরামতে। চাল ডাল খাওয়াই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রেলের গেটম্যান স্বপন দাস, নাজমুল হোসেন ও সুমন হোসেন এর সাথে কথা বলে জানা যায় এখানে সারাদিন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে রিক্সা ও মালবোঝায় ভ্যানগুলো পারাপার হতে গেলেই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য তারাও স্টেশন মাস্টারের বরাবর জানায়। এদিকে স্টেশন মাস্টার আইনাল হোসেন বলেন আমরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি এখনো কোনে সিদ্ধান আসেনি।
সেখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যশোর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর কবীর সুমনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বলেন রেলগেটের এখানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সাধারণ জনগণ দীর্ঘদিন যাবৎ ধরে ঝুঁকির মধ্যেই চলাচল করছে। এই অংশটুকু রেল কর্তৃপক্ষের আওতায় থাকার কারনে আমাদের পৌরসভা থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিমধ্যে জানিয়েছি রেলগেটের এই অংশটুকু দ্রুতই সংস্কার করার জন্য।
এ ব্যাপারে তথ্যনুসন্ধানে রেল কর্মকর্তা সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী গৌতম বিশ্বাস এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি জানায় গত ৩০ অক্টোবর ঢাকা থেকে রেল কর্র্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিদর্শন করে গেছে। সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের ভিতর রেলের ওই অংশটুকুর সংস্কার কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে।