Saturday, May 18, 2024

যশোর জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত সিংহভাগই চিকিৎসক ও কর্মচারীরা কশিশন ভিত্তিতে টাকা উপার্জনে ব্যস্ত

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালকে পুঁজি করে এবার খোদ চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কমিশন ভিত্তিতে দু’হাতে অর্থ কামায় করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

তাছাড়া, স্বেচ্ছাসেবক নামে কর্মরত ওয়ার্ডবয় ও কর্মচারীরা রোগীদের জিম্মি করে প্রতিদিন নূন্যতম ৫শ’ টাকা থেকে দুই হাজারের অধিক টাকা উপার্জন করে মোটর সাইকেল,রিকশা থেকে শুরু করে বিভিন্ন যানবাহনে বাড়ি ফিরছে। বর্তমানে সরকারী কর্মচারীদের চেয়ে বেসরকারি কর্মচারীদের দাপটে সরকারি কর্মচারী ও রোগী এবং রোগীর দর্শনার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিষয়টি এই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও রোগীর দর্শনার্থীদের কাছে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অত্র হাসপাতালে সে সব চিকিৎসক ও কর্মকর্তা এবং কর্মচারী রয়েছেন। তাদের সিংহভাগই কমিশন ভিত্তিতে দু’ হাতে অর্থ কামাচ্ছে। প্রতিদিন খালিহাতে এসে একেক জন নূন্যতম ৫শ’ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজারের অধিক অর্থ উপার্জন করছে। সকলের টার্গেট রোগী। রোগীদের রোগ টার্গেট নিয়ে হাসপাতালে বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মাত্রই চিকিৎসা পত্রে লেখা হচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা। শুধু পরীক্ষা নিরীক্ষা নয়। চিকিৎসকগন তাদের চুক্তিবদ্ধ বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরামর্শ দেন রোগীকে। তাদের চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট ছাড়া তারা দেখেন না এমন অভিযোগ তুলেছেন হাসপাতালে বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুর গ্রামের হযরত আলী, আরবপুরের রহিমা বেগম। এমন অভিযোগ প্রতিদিন শতশত রোগী ও তাদের দর্শনাথীদের। ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নেই বলে উপায়ূন্তর না পেয়ে বাধ্য হয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনকালে চিকিৎসক বাইরে যে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন সেখান থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হাসপাতালে চিকিৎসকদের পাশাপাশি যে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন।তাদের মধ্যে সকলের চেনা কয়েকজন সরকারি ডিউটি পালন করতে এসে কৌশল নিয়ে রোগীদের বাইরে তাদের কমিশন ভিত্তিক চুক্তি বদ্ধ প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেন। সরকারি দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে চুক্তিবদ্ধ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাদের কমিশনের টাকা নিয়ে ফিরছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় গরীব রোগীরা বাধ্য হয়ে বাইরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এছাড়া,অত্র হাসপাতালে সরকারি কর্মচারীদের চেয়ে স্বেচ্ছাসেবক কর্মচারীর সংখ্যা দ্বিগুন। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক,চিকিৎসক ও বিভিন্ন ব্যক্তিদের তদ্বীরের মাধ্যমে হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ঢুকে ভর্তিকৃৃত রোগীদের জিম্মি করে দৈনিক নূন্যতম ৫শ’ থেকে ২ হাজারের অধিক টাকা পকেটস্থ করে বাড়ি ফিরছেন। স্বেচ্ছাসেবক কার্ডের অন্তরালে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীদের সেবার নামে তাদের দর্শনাথীদের কাছ থেকে ঘন্টায় ঘন্টায় দায়িত্ব পালনের সুযোগে টাকা দাবি করছেন। যে রোগীর লোকজন তাদেরকে টাকা দিবেনা। সেই রোগীদের বিভিন্নভাবে কষ্টে ফেলে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করছেন। হাসপাতালে প্রতিদিন সকালে খালিহাতে এসে নূন্যতম ৫শ’ টাকা থেকে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা রোগীর লোকজনদে জিম্মি করে বাড়ি ফিরছেন। হাসপাতালে সাইকেল স্ট্যান্ডে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বেসরকারি কর্মচারীদের অধিকাংশই মোটর সাইকেল আরোহী। তারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হাসপাতালে ঢুকে নামীদামি কোম্পানীর ১লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে প্রায় আড়াইলাখ টাকা মূল্যের মোটর সাইকেল কিনে তাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্য ওই বাইক। সহজ সরল ও অসহায় রোগী এবং তাদের আত্মীয়স্বজনেরা হতবাক হয়ে তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। টাকা না দিলে তারা তার উপর দায়িত্ব পালন করছেন না।

এমন অভিযোগের শেষ নেই। হাসপাতালে বেসরকারি যত লোকজন রয়েছেন,তাদের সকলেই হাসপাতালে ঢোকার ১ বছরের মধ্যে লাখোপতি হয়ে যাচ্ছেন এমন খবর মিলেছে। খোঁজ নিয়ে আরো জানাগেছে, হাসপাতালে বহিরাগত দালালেরা সুযোগ বুঝে তাদের রোগীদের তাদের চুক্তিবদ্ধ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কৌশলে নিয়ে সর্বশান্ত করে ছাড়ছে। চুক্তিবদ্ধ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ৫০% কমিশনে দালালেরা অর্থ উপার্জন করে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে বিভিন্ন মহল থেকে জানানো হলেও কোন সূরাহা হচ্ছেনা। বরং দিনদিন বেড়ে চলেছে কমিশন ভিত্তিতে উপার্জন। এব্যাপারে স্বাস্থ্য মহাপরিচালকসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত