Sunday, May 19, 2024

হারানো যৌবন ফিরে পেতে বাঘারপাড়ার নকিমের পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করে লিটন !

- Advertisement -

মোঃ জহির রায়হানঃ

লিটনের হারানো যৌবন ফিরে পেতে হলে একটি পুরুষাঙ্গ আনতে হবে বলে জানিয়েছেলেন কবিরাজ আব্দুল বারেক। লিটন তাই বাঘারপাড়া এসে নকিম উদ্দীনের পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়ে গিয়েছিলেন । কিন্তু শেষ রক্ষা হলনা লিটনের। পুলিশের হাতে করিরাজ বারেক ও লিটনের ধরা দিতে হয়েছে। তাদেরকে আটকের পর এমনিই তথ্য জানিয়েছে বাধারপাড়া থানা পুলিশ । যশোরের বাঘারপাড়ায় নকিম উদ্দীন (৬০) নামের এক কৃষাণকে হত্যাকান্ডের ছয়দিনের মাথায় ক্লুলেস এ হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে যশোরের ডিবি পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন। আর এ অভিযানের মুল নেতৃত্বে ছিলেন যশোরের ডিবি পুলিশের একটি চৌকশ টিম।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই দিনের অভিযান চালিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে যশোর ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল।  প্রথমে চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা উপজেলা থেকে আব্দুল বারেক (৬২) ও পরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী এলাকা থেকে লিটন মালিতা (৪০) কে আটক করা হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃত লিটন মালিতার কাছ থেকে একটি পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও পুলিশের ওই সুত্র নিশ্চিত করেন।

সুত্রে আরও জানা গেছে, গত ২৬ মে উপজেলার ছাতিয়ানতলা বাজার থেকে ধান কাটার জন্য কৃষাণ হিসেবে নকিম উদ্দীনসহ তিনজনকে বাড়িতে নিয়ে যান পাইকপাড়া গ্রামের  মৃত ইবাদ মোল্যার ছেলে বেনজির আহম্মেদ (৪২)। এর মধ্যে গত রবিবার  বিকালে পারিশ্রমিকের টাকা বুঝে নিয়ে একজন চলে যায়।  বাকি আটক লিটন মালিতা ও নিহত নকিম উদ্দীন রাতে খাবার খেয়ে এক কক্ষে ঘুমিয়ে থাকে। পরে বাড়ির মালিক বেনজির আহম্মেদ সোমবার সকাল ৬টায় কৃষাণদের ডাক দিলে বাহির থেকে দরজা খোলা দেখতে পান। দরজা খোলা দেখে তিনি ভেতরে যেয়ে দেখেন জখম অবস্থায় কৃষাণ নকিম উদ্দীনের লাশ খাটের উপর পড়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে বাঘারপাড়া থানায় ৩১ মে মঙ্গলবার একটি মামলা হয়। আলোচিত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে মাঠে নামে যশোর ডিবি।

ডিবি সুত্রে জানা গেছে, আটক আব্দুল বারেক চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা উপজেলার মোজাম্মেল হকের ছেলে। সে পেশায় কবিরাজ। আটক অপর ব্যক্তি লিটন মালিতা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার মোহাম্মদ জুমা গ্রামের মো: হানিফ মালিতার ছেলে। আটক লিটন মালিতা দীর্ঘীদন যাবত যৌনরোগে ভূগছিলেন। পরে স্থানীয় ওই কবিরাজ আব্দুল বারেকের শরনাপন্ন হয় লিটন।  সেই কবিরাজ লিটনকে যে কোন একটি পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ উপড়ে নিয়ে আসলে সে হারানো যৌবন ফিরে পাবে বলে জানান।  সেই থেকে লিটন বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সুযোগ খুঁজতে থাকে।  এরই ধারাবাহিকতায় ধান কাটার শ্রমিক সেজে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে কাজ নেয়।  সুযোগ বুঝে কবিরাজের দেয়া মৌহাষুধের উপকরণ যোগাড় করতে নকিম উদ্দীন নামের এই শ্রমিককে খুন করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুরুষাঙ্গ নিয়ে পালিয়ে চলে যায় মানিকগঞ্জ।

এক পর্যায় ঘটনার বিস্তারিত জানতে পুলিশের টিম যোগাযোগ করে ঘিওর থানার ওসি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লবের সাথে। তিনি জানান, লিটন মালিতা গত মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ডে ধান কাটার শ্রমিক সেজে আসেন।  সেই শ্রমিকের হাট থেকে ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী গ্রামের জনৈক কৃষক জিতু তাকে ধান কাটার কাজে বাড়িতে নিয়ে আসেন। অবস্থান শনাক্ত করে বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জর ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী এলাকা থেকে ধান কাটার কাজরত অবস্থায় ঘিওর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করে যশোর ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল।

এ বিষয়ে যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভাব হয়নি।

তবে,  আসামী আটকের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন জানান, হারানো যৌবন ফিরে পেতে কবিরাজের নির্দেশে নৃশংস এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যম ব্যবহার করে  মঙ্গলবার ও বুধবার অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে যশোর ডিবি পুলিশ। এসময় আটক লিটন মালিতার কাছ থেকে খুন হওয়া ব্যক্তির পুরষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, যশোর ডিবি পুলিশের নেতৃত্বে একেরপর এক ক্লুলেস ঘটনার রহস্য উন্মোচন হচ্ছে । বিশেষ করে এসআই মফিজুরের দক্ষতা অবাক করেছে সবার। ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকারের নেতৃত্বে এ টিম সর্বকালের সেরা বলেও অভিমত করেন অনেকে।

সর্বশেষ বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৪৫ মিনিটে  যশোর জেলা পুলিশের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের মিডিয়া সেলে জানানো হয়েছে 

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে  প্রেস ব্রিফিং করা হবে।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত