Sunday, May 19, 2024

যশোরে মিনারুল হত্যা মামলায় হাফিজুরের ফাঁসির আদেশ

- Advertisement -

যশোর সদর উপজেলার সালতা গ্রামের মিনারুল হত্যা মামলায় ওসমানপুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি এম. ইদ্রিস আলী।  মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি হাফিজুর রহমান ওসমানপুর গ্রামের চান্দালী মোল্লার ছেলে।
নিহত মিনারুল সালতা গ্রামের মৃত সদর আলী মোল্লার ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, দন্ডপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কৃষিবিভাগে কাজ করতেন। তার ছোট ভাই আব্দুল মান্নানের বন্ধু ছিলেন নিহত মিনারুল। মান্নান বাড়িতে দর্জির কাজ করতেন। মিনারুল দর্জির কাজ শেখার জন্য মান্নানের বাড়িতে যেতেন। এ যাতায়াতের ফলে হাফিজুরের প্রথম স্ত্রী সাবিনার সাথে মিনারুলের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। এ বিষয়টি একদিন হাফিজুর দেখে ফেলেন। ঘটনার দিন হাফিজুরের কাছে ক্ষমা চান মিনারুল। হাফিজুর এ বিষয়টি আর কাউকে বলেননি। কিন্তু হাফিজুর মনের দুঃখে তার স্ত্রী সাবিনাকে তালাক দেন এবং পরে ডলি নামে আরেকজকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর কথা কখনো ভুলতে পারেননি হাফিজুর।
এরপর নিহত মিনারুল তার গ্রামের বিলকিস নামে আরো এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায়
মিনারুল কয়েক বছর হাজতবাসও করেন। এ সব ঘটনায় হাফিজুরের আরো বেশি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সে মিনারুলকে হত্যার পরিকল্পনা তখন থেকেই করে। পরবর্তীকে হাফিজুর আরো বেশি করে মিনারুলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরমাঝে মিনারুল বিয়ে করেন। মিনারুল তার স্ত্রীর সাথীর সুখে শান্তিতে ঘর করে। যা দেখে হাফিজুরের প্রথম স্ত্রীর কথা মনে পড়ে যায়। ওই সম্পর্ক উস্কে দেয় হত্যার।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৪ আগষ্ট রাতে প্রথমে মিনারুলের বাড়ির পাশের একটি বাগানে যেয়ে ধারালো অস্ত্র রেখে আসে হাফিজুর। রাত ১০টার দিকে ফের হাফিজুর তার বাড়িতে যান। এ সময় মিনারুলকে ইশারায় ডেকে বাড়ির পাশে ওই বাগানে নিয়ে যায় হাফিজুর। এরপর ওই দা দিয়ে হাফিজুর মিনারুলকে কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়। এ ঘটনায় মিনারুলের বড় ভাই আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পিবিআই এসআই জিয়াউর রহমান। পিবিআই মিনারুলকে ঘটনার নয়দিনের মাথায় আটক করে । একই সাথে হত্যায় ব্যবহিত দা উদ্ধার করে। ২৫ আগষ্ট আদালতে সোপর্দ করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মল্লিক তার জবারবন্দি গ্রহন শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই থেকেই হাফিজুর কারাগারে আটক রয়েছেন। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট জমাদেন। এক পর্যায় ২৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে বৃহস্পতিবার আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ মামলার রায় ঘোষনা করেন।

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত