Saturday, May 18, 2024

বাঘারপাড়ার নকিম হত্যায় লিটন ও কবিরাজ বারেকের আদালতে স্বীকারোক্তি

হারানো যৌবন ফিরে পেতেই কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ নিয়ে যশোরের বাঘারপাড়ায় কৃষি শ্রমিক নকিম উদ্দীনকে হত্যা করে লিটন মালিতা। কবিরাজ বারিকের কথামতো সে তাকে হত্যা করে একটি পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ নিয়ে যায়।
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করার পর বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে তারা হত্যার কথা স্বিকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরআগে সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম। এসময় হত্যার রহস্য ও আসামি আটকের বিস্তারিত তথ্য জানান।  তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
প্রেস ব্রিফিংএ জানান, আটক কবিরাজ আব্দুল বারেক চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মোজাম্মেল হকের ছেলে।তিনি পেশায় কবিরাজ। আটক অপর ব্যক্তি লিটন মালিতা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার মোহাম্মদ জুমা গ্রামের মো: হানিফ মালিতার ছেলে। আটক লিটন মালিতা দীর্ঘদিন যাবত যৌনরোগে ভূগছিলেন।
পরে স্থানীয় কবিরাজ আব্দুল বারেকের শরণাপন্ন হয় লিটন। কবিরাজ লিটনকে যে কোনো একটি পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ উপড়ে নিয়ে আসলে সে হারানো যৌবন ফিরে পাবে বলে জানান। সেই থেকে লিটন বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সুযোগ খুঁজতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ধান কাটার শ্রমিক সেজে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে কাজ নেয়। সুযোগ বুঝে কবিরাজের দেয়া মহাওষুধের উপকরণ যোগাড় করতে নকিম উদ্দীন নামের এই শ্রমিককে খুন করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে চলে যায় মানিকগঞ্জ।
বিষয়টি নিয়ে বাঘারপাড়া থানায় ৩১ মে মঙ্গলবার একটি মামলা হয়। যার নম্বর ১৮/ ধারা ৩০২ ও ২০১/ ৩৪ দণ্ডবিধি। আলোচিত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার এর নির্দেশে মাঠে নামে যশোর ডিবি পুলিশ।
লিটন মালিতা গত মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে ধান কাটার শ্রমিক সেজে আসেন। সেই শ্রমিকের হাট থেকে ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী গ্রামের জনৈক কৃষক জিতু তাকে ধান কাটার কাজে বাড়িতে নিয়ে আসেন। অবস্থান শনাক্ত করে বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী এলাকা থেকে ডিবি পুলিশের একজন সদস্য ধান কাটার শ্রমিক সেজে ধান কাটার কাজরত অবস্থায় ঘিওর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করে যশোর ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল।
উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যম ব্যবহার করে মঙ্গলবার ও বুধবার অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে যশোর ডিবি পুলিশ। এ সময় আটক লিটন মালিতার কাছ থেকে খুন হওয়া ব্যক্তির পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিবির ওসি রুপণ কুমার সরকার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মফিজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত সোমবার দিবাগত রাতে যশোরের বাঘারপাড়ায় উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে কৃষি শ্রমিক নকিম উদ্দীন হত্যা হয় । ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ ও আলামত হিসেবে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু উদ্ধার করে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ। নিহত নকিম উদ্দীন বাঘারপাড়া উপজেলার ধুপখালী গ্রামের মৃত দলিলুদ্দিন মোল্যার ছেলে।
রাতদিন সংবাদ
- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত