Monday, May 20, 2024

শ্রাবণের সাথে কোনও সম্পর্ক নেই, সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা

- Advertisement -
যশোরের কেশবপুরের সন্তান কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও ছাত্রদল তাকে অভিনন্দন জানালেও আনুষ্ঠানিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বলছেন, এটি অস্বাভাবিক কোন কিছুই না।

তার পরিবার বলছে, কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণের পরিবার দীর্ঘ ১২/১৩ বছর তার সাথে পরিবারের কোনও সম্পর্ক ও কোন প্রকার যোগাযোগ নেই।গত ২০১৯ সালে শ্রাবণ যখন প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রার্থী হন, সেইসময় তার বাবা কেশবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এবং তার ভাইয়েরা প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।

সেই সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা দাবি করেন, ভিন্ন রাজনৈতিক কারণে শ্রাবণের সঙ্গে তাদের পারিবারিক কোনও সম্পর্ক নেই। সেও (শ্রাবণ) বাড়িতে আসে না এবং পরিবারের কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে না।

গত রোববার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৫ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ জুয়েল। এছাড়া সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়ার নাম ঘোষণা করা হয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়।শ্রাবণ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় রোববার  সন্ধ্যায় কেশবপুর শহরে আনন্দ মিছিল বের করে উপজেলা ছাত্রদল। তারা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং মিছিল শেষে মিষ্টিমুখের আয়োজন করা হয়।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের  বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি। মহাকবি মাইকেল মধুসূদনের জন্মস্থান কেশবপুরের আরেক কৃতি সন্তান কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন। এটি অবশ্যই আমাদের জন্যে গর্বের।

তিনি বলেন, শ্রাবণ ভাইয়ের পরিবারের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনিই একমাত্র আমাদের দলের সঙ্গে রয়েছেন। সেকারণে তার বাবা, ভাইরা তার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। শ্রাবণ ভাইও বাড়িতে যেতেন না। ২০১৮ সালে ভোটের সময় ধানের শীষের জন্যে কাজ করতে একবার এসেছিলেন।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান বলেন, কেশবপুরের সন্তান তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছেন, এলাকার মানুষ হিসেবেও গর্ব হচ্ছে। তাছাড়া শ্রাবণ দীর্ঘদিন ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। আমরা সকলেই খুশি হয়েছি। তিনি ছাত্রদল না হয়ে অন্য কোনও সংগঠনের হলেও খুশি হতাম; কেননা তিনি আমাদের এলাকার সন্তান।

আওয়ামী পরিবারের সন্তান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হয়েছেন- এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী রীগের সভাপতি রুহুল আমিন এবং সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শ্রাবণ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছে- এটি শুনেছি। একজন মানুষের নিজ নিজ মত প্রচার করা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতার বিষয়; এটি নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই।
গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, তার নেতৃত্ব নিয়ে আমার কোনও মতামত নেই। আমি খুশিও না, দুঃখিতও না। কেননা সে তো আমার দলীয় আদর্শের কেউ না। যদি আমার দলের কেউ হতো, তাহলে প্রতিক্রিয়া থাকতো।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শ্রাবণের বাবা কাজী রফিকুল ইসলাম আমাদের দলের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান। তার এক ভাই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ইউপি নির্বাচন করেন এবং দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন। একই কারণে তার আরেক ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তিনিও বহিষ্কার হন।

প্রতিক্রিয়া জানতে শ্রাবণের বাবা কাজী রফিকুল ইসলাম ও ভাই সাগরদাঁড়ী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলামের মোবাইলফোনে কয়েকদফা কল করা হয়। অসুস্থতার কারণে তার বাবা ফোনকল রিসিভ না করলেও পরে তার বড়ভাই  ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়।

তিনি বলেন, শুনেছি শ্রাবণের নেতৃত্বের বিষয়ে। তার ব্যাপারে আমাদের পরিবারের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। কেননা আমরা সবাই আওয়ামী পরিবারের সদস্য, একমাত্র সে ছাড়া। ভিন্ন রাজনীতি করার কারণে আমাদের সাথে তার ১২/১৩ বছর কথা হয় না। সে বাড়িতেও আসে না।

রাতদিন সংবাদ

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত