Monday, May 13, 2024

বাঘারপাড়ায় চিত্রা নদী খননের মাটি নিয়ে ব্যাক্তির ব্যবসা

- Advertisement -

বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধিঃ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যশোরের বাঘারপাড়ায় অবৈধ ভাবে চিত্রা নদী খননের মাটি নিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি ছাড়াও আছে সহায়তাকারী, পাশের জমির মালিক ও ট্রলি (ট্রাক্টরের ইঞ্জিনে ট্রাকের বডি) মালিক। ট্রলি প্রতি ৫’শ থেকে ৭’শ টাকার বিনিমময়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের এ মাটি ব্যবসা। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী নদী খননের মাটি ব্যাক্তি মালিকানায় বিক্রির কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড ।

জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৯-২০ অর্থ বছরে জেলা সদরের দাইতলা থেকে থেকে বাঘারপাড়া পৌরসভার ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটারের খনন কাজ শেষ করে। খননের মাটি নদীর দুই পাড়েই স্তুপ করে রাখা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী কোনো জমির মালিক ক্ষতিগ্রস্থ হলে উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) অফিস বরাবর আবেদন করতে হবে। তখন ইউএনও অফিস নিলামের মাধ্যমে এ মাটি বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু এ সব নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে এখান থেকেই মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে উপজেলার কড়াইতলা গ্রামের মৃত তৈবর বিশ্বাসের ছেলে খলিল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। খলিল বিশ্বাসকে সহায়তা করছে দরাজহাট ইউনিয়ন পরিষদের ১নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) নাসের আলি ও কড়াইতলার সাখাওয়াত। তারা চার দিন (বৃহঃবার থেকে রবিবার) পাঁচটি ট্রলিতে ৫’শ ৭’শ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ডোবা ভরাটে বা বাড়ির উঠান উঁচু করতে নদীর মাটি সরবরাহ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কড়াইতলা গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি বলেন, নাসের মেম্বার ট্রলি প্রতি ৫’শ থেকে ৭’শ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন লোকের পুকুর ভরাটে ও বাড়ির অঙ্গিনায় দেওয়ার জন্য মাটি বিক্রি করছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের কড়াইতলা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। নদীর পাশেই খলিল বিশ্বাসের পৈত্রিক সম্পত্তি আছে। সেই জমির পাশে ২০১৯ সালে নদী খননের মাটি স্তুপ করে রাখে পানি উন্নয়নের বোর্ডের ঠিকাদার। এরপর গত ১২মার্চ খলিল বিশ্বাস নিজের বাড়ির পাশের ডোবা ভরাটের শর্তে মাটি কেটে নেওয়ার অনুমতি দেয় মেম্বার নেসার আলিকে। নাসের আলি ৫’শ ৭’শ টাকার চুক্তিতে নিজস্ব ট্রলির সাহায্যে কড়াইতলা গ্রামের বিভিন্ন ব্যাক্তিকে সরবরাহ করে চলেছেন। মাটি বিক্রির চুক্তিতে সহায়তা করেন একই গ্রামের সাখাওয়াত।

অভিযোগের বিষয়ে খলিল বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁর ছেলে বাবুল বিশ্বাস বলেন, বাবা ফোন ব্যবহার করেন না। তখন মাটির বিষয়ে তিনি (বাবুল) বলেন, নদীর মাটি আমাদের জমিতে পড়ায় ইউএনও স্যারের অনুমতি নিয়ে নিজেদের একটা গর্ত ভরাট করেছি। তবে বাদ বাকি মাটি কোথায় বিক্রি হয়েছে বা ট্রলিতে করে নিয়ে গেছে তা আমার জানা নেই’।

ইউপি সদস্য নাসের আলি মাটি বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,‘ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাটি কাটার স্থান পরিদর্শন করে মৌখিক অনুমতি দিয়ে গেছেন তাই মাটি সরিয়ে নিচ্ছি। এ সময় তিনি আরও বলেন, গ্রামে আমার বিরোধী পক্ষ ষড়যন্ত্র করে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করছেন’।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সায়দুর রহমান বলেন,‘নদী খননের মাটি ব্যাক্তি উদ্যেগে বিক্রির সুযোগ নেই। খুব শীঘ্রই চিত্রা নদী খননের মাটির টেন্ডার আহবান করা হবে। চুরি করে মাটি বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন’।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম আবুজর গিফারী মৌখিক অনুমতির বিষয় অস্বীকার করে বলেন, ‘খবর পেয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তদন্তের মাধ্যমে যদি মাটি বিক্রয়ের বিষয়টি প্রমানিত হয় তবে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত