নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘জেএমবি’ মতাদর্শের নতুন সংগঠন ‘জামআতুল মুসলেমিন’ এর আমিরসহ ১০ সদস্যকে আটকের কথা জানিয়েছে র্যাব-৬।
খুলনায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শনিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৬-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ।
তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মহানগরীর খালিশপুর থানার বিআইডিসি রোডের একটি বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, আনোয়ার কবির মিলন ওরফে মিদ্দাত হোসেন, সোহেল রানা, আমিনুল, কামরুল ইসলাম, রিফাত রহমান, আব্দুর রউফ, শেখ ফরিদ, আব্দুল আলীম, রফিকুল ইসলাম ও তালহা ইসলাম।
র্যাব অধিনায়ক জানান, সংগঠনটির স্বঘোষিত আমির মিদ্দাত হোসেন ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে লেখাপড়া করেন। লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে এলে তার সঙ্গে ভোলা-চরফ্যাশন এলাকার প্রফেসর মজিদের পরিচয় হয়।
প্রফেসর মজিদ তৎকালীন জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমান এবং শায়খ সাইদুর রহমানের অনুসারী ছিলেন। জেএমবির ভারপ্রাপ্ত সদস্য মজিদ ৬৩ জেলায় বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন এবং পরবর্তীতে জেল হাজতে ছিলেন। জেলে থাকাকালীন মজিদ জেএমবির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
মিদ্দাত হোসেন সৌদি আরব থেকে ফেরার পর থেকেই মজিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে মজিদের কাছে জেএমবির বায়াত গ্রহণ করে।
সে সময়ে মিদ্দাতের সঙ্গে জেএমবির অনেক সদস্যের পরিচয় হয়। সন্দেহভাজন জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য ২০১২ সালে ডিবি পুলিশ হাতে তিনি আটক হন। এরপর থেকে মিদ্দাত একটি নিজস্ব সংগঠন তৈরি করার ব্যাপারে পরিকল্পনা করেন।
২০১৮ সালে প্রফেসর মজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কিছু ব্যক্তি মিদ্দাত হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে নতুন সংগঠন তৈরি এবং লোক সংগ্রহের জন্য একতাবদ্ধ হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা দ্বীনের দাওয়াত দেয়া শুরু করেন।
তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিলো, দাওয়াত দেয়ার মাধ্যমে জনসাধারণের একটি বড় অংশকে নিজেদের দলে ভেড়ানো এবং পরবর্তীতে সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি আরো বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে যশোর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ এবং ঢাকায় তাদের সদস্য সংগ্রহ ব্যাপক আকারে চলছে।
পরবর্তীতে কুষ্টিয়া, রাজশাহী, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ এলাকাতে সদস্য সংগ্রহের পরিকল্পনা ছিলো।
এ ছাড়া ভবিষ্যতে তারা সারাদেশে সদস্য সংগ্রহ করার জন্য সবাইকে অনুপ্রাণিত করছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা খুলনায় তিনদিনের কর্মসূচির আয়োজন করে, যার মূল লক্ষ্য ছিলো নেতৃত্ব এবং সারাদেশে কীভাবে কার্যক্রম চলবে সেটি ব্যাখ্যা করা।
র্যাব-৬-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বজলুর রশীদ বলেন, এই দশজনের সঙ্গে বাড়ির মালিককেও আটক করা হয়েছিলো। সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। এ ছাড়া আটক দশজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক