Sunday, May 19, 2024

মালিঙ্গার রঙিন অধ্যায়ের সাদা-কালো সমাপ্তি

- Advertisement -

ক্রিকেট মাঠে অনেকেই সাফল্য পেয়েছেন। অনেকেই চার-ছক্কার ঝড় তুলেছেন, বল হাতেও শিকার করেছেন একের পর এক উইকেট। কিন্তু কয়জনকে আর সবাই মনে রাখে? হাতে গোনা কিছু ক্রিকেটারই আলাদা একটা অস্তিত্ব গড়ে নিতে পারেন। লাসিথ মালিঙ্গা তাদেরই একজন! তার বোলিং অ্যাকশনটাই তো ছিল দেখার মতো। বল করতে ছুটে আসার শুরুতেই চুমু খেতেন বলে। তারপর সেই অদ্ভুত বোলিং অ্যাকশনে থাকতো দারুণ সব ইয়র্কার। ঝাঁকড়া রঙিন চুলের মালিঙ্গাকে আলাদা করেই চেনা যেত। সেই রঙিন ক্রিকেটারকে মিস করবে ক্রিকেট বিশ্ব। কারণ একদিন আগেই ১৪ সেপ্টেম্বর, সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন শ্রীলঙ্কার এই স্পিডস্টার। এখন অবশ্য খেলছিলেন শুধু টি-টোয়েন্টি। এবার মালিঙ্গা বলে চুমু খেয়ে এই ফরম্যাটকেও বললেন গুডবাই। ঘোষণাটা এলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ যেন মালিঙ্গার রঙিন অধ্যায়ের সাদা-কালো ইতি। বয়সটাও তো কম হয়নি। গত আগষ্টে ৩৮ হয়েছে। এতদিনে একজন পেসারের নামের আগে ‘সাবেক’ শব্দটা লেখা হয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু মালিঙ্গা এখানেই ব্যতিক্রম। লম্বা সময় খেলতে চান বলে শুরুতে সরিয়ে নিয়েছেন টেস্ট থেকে। এরপর বিদায় বলেছেন ওয়ানডেকেও। শুধু ছিলেন ২০ ওভারের ক্রিকেটার। এখন সরে গেলেন সেখান থেকেও।এবার উঠতি প্রতিভাদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়াটাই যৌক্তিক মানলেন। সরে দাঁড়ালেন ক্রিকেট থেকে। গত বছরের মার্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে শেষ টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক খেলেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে খেলার আশাটাও হয়তো মনের কোনায় ছিল। হয়তো এ কারণেই শ্রীলঙ্কার দল ঘোষণা অবধি অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু লঙ্কানদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ না মিলতেই অবসরে গেলেন। বিশ্বকাপের ময়দান থেকে বিদায় নেওয়া হলো না এই কিংবদন্তির। মনে কী অভিমানের মেঘ জমলো কিছুটা! লাসিথ মালিঙ্গা তার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট শুরু করেন ২০০১-০২ মৌসুমে। এরপর ২০০৪ সালের জুলাইয়ে ডারউইনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে টেস্ট অভিষেক। ওই বছরই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে তার অভিষেক। আন্তর্জাতিক টি-টেয়েন্টিতে পথচলা জুন, ২০০৬। এরপর লম্বা সময় খেলা হয়নি টেস্ট। ভারতের বিপক্ষে কলম্বোয় ২০১০ সালে শেষ টেস্ট খেলেন মালিঙ্গা। ওয়ানডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার হয়ে শেষবার দেখা গেল ২০১৯ সালের জুলাইয়ে। এবার তো টি-টোয়েন্টিতেও ইতি টানলেন ক্যারিয়ারের। মালিঙ্গা ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেটের ব্যস্ত তারকা। খেলেছেন একাধিক দলে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেন রংপুর রাইডার্সের হয়ে। এছাড়া খেলেছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, মেলবোর্ন স্টারস, কেন্ট ক্রিকেট ক্লাব, গুয়েনা ওয়ারিয়র্স, মারাঠা ওয়ারিয়র্স ও মন্ট্রিয়েল টাইগার্সের হয়ে। আইপিএল খেলতেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। ২০১৯ থেকে ২০১৫ থেকে টানা এবং ২০১৭ ও ২০১৯ সালের আইপিএলে ছিলেন তিনি। আইপিএলে মোট ১২২ ম্যাচে ১৭০ উইকেট তুলেছেন মালিঙ্গা। সেরা বোলিং ১৩ রানে ৫ উইকেট। ২০১১ সালের আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ২৮টি আর ২০১৫ সালে ১৫ ম্যাচে নেন ২৪ উইকেট। ২২৬টি ওয়ানডে ম্যাচে ৩৩৮টি আর ৮৪ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি মালিঙ্গাই সর্বাধিক উইকেটশিকারী। উইকেটের সংখ্যা ১০৭। সব মিলিয়ে ২৯৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। নিয়েছেন ৩৯০টি উইকেট। এই ফরম্যাটে আন্তর্জাতিকে তার সেরা বোলিং ৬ রানে ৫ উইকেট। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে পাল্লেকেলেতে, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। শ্রেণির ক্রিকেটে ২৫৭টি আর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ৪৪৬টি উইকেট রয়েছে শ্রীলঙ্কান এই কিংবদন্তির। বিশ্বের একমাত্র বোলার হিসেবে দুটি ডাবল হ্যাটট্রিক করেছেন মালিঙ্গা।

অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত