Tuesday, May 14, 2024

যশোরে রিমান্ডের ভয় দেখিয়ে আসামির স্বজনের কাছে টাকা দাবি আইনজীবীর

- Advertisement -

বুধবার আসামির রিমান্ড শুনানি  হবে। রিমান্ড নামঞ্জুর করতে হলে টাকা লাগবে। জিআরও এবং সিএসআইকে টাকা দিয়ে রিমান্ড আবেদন বাতিল করতে হবে। তা না হলে রিমান্ডে নিলে আসামির সব শেষ হয়ে যাবে। এসব কথা বলে যশোরে এক আসামির স্বজনের কাছে টাকা দাবির অভিযোগ উঠেছে আইনজীবীর বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ওই আসামির আইনজীবী হিসেবে তিনি নিযুক্তই হননি। এছাড়া  পুলিশ ওই আসামির রিমান্ডের আবেদনও করেনি। অথচ তার আগেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আমজাদ হোসেন নামে এক আইনজীবী। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার আদালতপাড়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে। কেউ কেউ এ ধরনের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ওই আইনজীবীর বিচার দাবি করেন। আসামির স্বজন কেশবপুর উপজেলার ভাল্লুকঘর গ্রামের রেশমা খাতুন জানান, গত ২২ আগস্ট রাতে মণিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া থেকে ইজিবাইক চুরি মামলায় তার ভাই মাহমুদ হোসেন মোল্লাকে পুলিশ আটক করে। পরে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠালে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। খবর পেয়ে মঙ্গলবার ভাইকে ছাড়াতে যশোরে আসেন তিনি। একজনের মাধ্যমে তিনি আমজাদ হোসেনের কাছে যান। পরে আমজাদ তার ভাইকে জামিন করার জন্য জামিননামা কেনার জন্যে ১৫শ’ টাকা নেন। এবং দ্রুতই জামিন হবে বলে জানান। কিছু সময় পর তার সুর পাল্টে যায়। আমজাদ তাকে জানান, মাহমুদকে বুধবার রিমান্ডে নেয়া হবে। এখন কিছুই করার নেই। পাশে থাকা রমজান নামের একজন বলে এখনই যদি পাঁচ হাজার টাকা দেয়া না হয় তাহলে রিমান্ড থেকে বাঁচানো সম্ভব না। আইনজীবী আমজাদও একই সুর দিতে থাকেন। তিনি তাড়াতাড়ি টাকা যোগাড় করার জন্যে বলেন। ভাইকে রিমান্ড থেকে রক্ষা করতে  টাকার জন্যে ছুটে বেড়ান রেশমা। কিছু সময় পর এই প্রতিবেদকের সাথে দেখা হয় রেশমার। এরপর দুপুর আড়াইটায় কল করা হয় আইনজীবী আমজাদকে। তিনি জানান, কমপক্ষে তিন হাজার টাকা দিতেই হবে। তিন হাজারের দুই হাজার টাকা সিএসআই ও এক হাজার দিতে হবে কোর্ট জিআরওকে। কাল সকালের মধ্যেই ওই টাকা আইনজীবীর কাছে দিতে হবে। তা না হলে বড় সমস্যা হয়ে যাবে মাহমুদের।
এদিকে, বিকেলে আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ মামলায় পুলিশ কোনো রিমান্ড আবেদন করেনি। এছাড়া, মাহমুদকে জামিনের জন্যে কেউ আবেদন জমা দেননি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জিআরও আখি রহমান। তিনি আরও বলেন, রিমান্ড হওয়া না হওয়া আদালতের এখতিয়ার। সেখানো কারও হাত নেই। এ বিষয়ে সিএসআই মারফত হোসেনও একই কথা বলেন। যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আইনজীবী নিযুক্ত হওয়ার আগে টাকা চাওয়ার কোনো নিয়ম নেই। এ ধরনের কর্মকান্ড সাধারণ আইনজীবীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন বিষয়টি প্রমাণিত হলে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে রাতে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা হয় আইনজীবী আমজাদ হোসেনের সাথে। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি এমনভাব দেখান যেন ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানেন না! তিনি সব অস্বীকার করেন। বলেন, টাকা চেয়েছিলেন রমজান নামের এক ব্যক্তি। রমজানই মূলত ওই নারীকে তার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি জামিনের জন্য বুধবার আবেদন করবেন বলে জানান।

সূত্রঃ গ্রামের কাগজ

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত