সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেত্রী খালেদা খানমের মেয়ে সোহেলী আহম্মদকে কেউ অপহরণ করেনি; বরং তিনি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি সাজেদুর রহমান পপ্পুর সাথে স্বেচ্ছায় চলে গেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকা থেকে নোটারি পাবলিকের একটি হলফনামা আইনজীবীর মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠিয়ে এই দাবি করেন।
গত ১২ আগস্ট এমপি-কন্যা এই হলফনামায় স্বাক্ষর করেন। এর আগে তার স্বামী বিল্লাল হোসেন লিটন স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগ এনে স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি পপ্পুর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। মা মহিলা এমপিও তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছিলেন।
ঢাকা জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মো. মানজুর হোসাইন স্বাক্ষরিত হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমি আমার সাবেক স্বামী মাদকাসক্ত বিল্লাল হোসেন লিটনকে পাঁচ মাস আগে তালাক দিয়ে সাজেদুর রহমান পপ্পুকে বিয়ে করে ঘর-সংসার করছি। ফলে নিজের অপহরণের বিষয়ে আমার সাবেক স্বামী ঝিনাইদহ সদর থানায় যে মামলা করেছেন তার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আমাকে অপহরণের প্রশ্নই ওঠে না। বরং আমি বর্তমান স্বামী সাজেদুর রহমান পপ্পুকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে ঘর-সংসার করছি…।’
তিন পৃষ্ঠার হলফনামায় এমপি-কন্যা সোহেলী আহম্মেদ দাবি করেছেন, তার সাবেক স্বামী বিল্লাল হোসেন লিটন মাদকাসক্ত, কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, নারী কেলেংকারির হোতা এবং প্রতারক হিসেবে পরিচিতি লাভ করলে তিনি নিজের ও একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাকে তালাক দেন এবং গত ৩ মার্চ ২০২১ তারিখে সাজেদুর রহমান পপ্পুকে মুসলিম শরিয়া আইন মোতাবেক বিয়ে করেন। তালাক প্রদানের পর স্ত্রী দাবি করে অপহরণ মামলা করার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই সাবেক স্বামীর।
হলফনামায় সোহেলী আহম্মেদ দাবি করেন, তার সাবেক স্বামী কাঞ্চনপুর ট্রাকটারমিনাল-পাড়ার শফি উদ্দীন মুন্সির ছেলে বিল্লাল হোসেন লিটনকে প্রথমে আদর্শপাড়ার কাজী হারুন অর রশিদের নিকাহ রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তালাক দেন। তখন লিটন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। এভাবে তিনি তার সাবেক স্বামীকে ৫-৬ বার তালাক দেন। প্রতিবারই তিনি আর মাদক সেবক করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতুন করে বিয়ে করেন। কিন্তু লিটন মাদক সেবন ও ব্যবসা থেকে ফিরে না আসায় সর্বশেষ তাকে চূড়ান্তভাবে তালাক দিয়ে পপপুর সঙ্গে ঘর-সংসার শুরু করেন।
‘এরপর লিটন পরিকল্পিতভাবে আমার মা আওয়ামী লীগের মহিলা এমপি ও বাবাকে জিম্মি করে ভয়-ভীতি দেখায়। এমনকী আমার মায়ের অসুস্থতার খবর দিয়ে বাসায় ডেকে আনে। বাসায় আটকে রেখে জোরপূর্বক আবারও একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং ফেসবুকে স্বামী-স্ত্রীর মতো ঘনিষ্ঠ ছবি তুলে পোস্ট করতে থাকে, যাতে আমার বর্তমান স্বামী পপ্পু রুষ্ট হয়ে ওঠেন,’ হলফনামায় দাবি করেন সোহেলী।
‘এভাবে তিন মাস আমি আমার মায়ের বাসায় বন্দি জীবন কাটানোর পর পালিয়ে বর্তমান স্বামীর বাড়িতে চলে আসি। এরপরেই জানতে পারি সাবেক স্বামী আমাকে স্ত্রী দাবি করে ঝিনাইদহ সদর থানায় অপহরণ মামলা করেছে। সেই মামলায় আমার বর্তমান স্বামী সাজেদুর রহমান পপ্পুকে আসামি করা হয়েছে; যা হয়রানির নামান্তর। আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। আমি স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে পপ্পুকে বিয়ে করেছি।’
এই বিষয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি খালেদা খানম প্রথম থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে আসছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার অবস্থান ও সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য মেয়েকে অপহরণ করেছে। তিনি তার মেয়ের জীবন নিয়েও আশংকা প্রকাশ করেন। এই ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ঝড় ওঠে।
অনলাইন ডেস্ক
অপহরণ নয়, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা পাপ্পুকে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন এমপি কন্যা সোহেলী
- Advertisement -
- Advertisement -