শফিয়ার রহমান, মনিরামপুর: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির মধ্যে ভেজা অসহায় মানুষের মাঝে ৫০টি উন্নতমানের ছাতা বিতরণ করেছেন জেরিন।তিনি মণিরামপুর উপজেলার মাঝিয়ালী গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে। মণিরামপুর পৌরশহরে ঘুরে অসহায় মানুষের মাঝে এ ছাতা বিতরণ করছেন। এরআগেও তিনি বিভিন্ন সময় অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে আলোচনায় উঠে আসেন জেরিন।
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষায় পেটের তাগিদে এরা ঘর থেকে বের হয়েছেন। সারাদিন বৃষ্টিতে ভেজা কাপড় আর শরীর একাকার হয়ে এক মানব মূর্তী হচ্ছিল তাদের। দেখে মনটা খারাপ হয় জেরিনের। অভিভাবকের সাথে কথা না বলেই বাবার আমড়া বিক্রি করা টাকা দিয়েই কিনে আনলেন ৫০ টি উন্নতমানের ছাতা। আগে দিলেন ঝাড়-মুড়ি বিক্রেতা ও ভ্যান চালককে। এরপর দিনভর বর্ষায় অসহায়দের ছাতা কিনে দেওয়ার ইচ্ছার কথা জানালেন জেরিন।
প্রকৃত নাম সানজিদা জেরিন সায়ীদা। বাবা পেশায় সহকারি তহশীলদার। জেরিন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের পঞ্চম সেমিষ্টারের ছাত্রী। শুধু ছাতা দিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা নয়। গত বছর করোনার প্রাদূর্ভাব দেখা দিলে জেরিন মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা দিয়ে খাদ্য সামগ্রী কিনে ভ্যান ভাড়া করে অসহায়দের ঘরে নিজেই পৌছে দিয়েছেন। এছাড়া প্রাকৃতিক যে কোন দুর্যোগে নিজের সাধ্যমত করে অসহায়দের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ান জেরিন। স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে বেশ কয়েকবার জেরিনের এ ধরনের কর্মকান্ড তুলে ধরে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।
চাঁদপুর গ্রামের মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘জেরিন মা লকডাউনের সময় স্বামীর কাজ না থাকায় কষ্টের সময় চাল তরিতরকারি দিল’। শুধু ময়িরম নয়, খেদাপাড়া গ্রামের রুপালী খাতুন, শামছুন্নাহার, কুলছুম বেগম, জুড়ানপুর গ্রামের বিজন দাস, তাহেরপুরের তাসলিমা, রুপবানসহ একাধিক নারী-পুরুষ জেরিনের প্রশংসা করছিলেন।
জেরিন বলেন, শুধু নিজেরা ভাল থাকার মধ্যে সার্থকতা নেই। সবাইকে নিয়ে ভাল থাকার মজাই আলাদ। নিজের জমানো কিংবা বাবার কাছ থেকে নেয়া টাকায় কেনা খাদ্য সামগ্রিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জেরিন।