Friday, May 17, 2024

শরণখোলা মাতৃভাষা কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।।

এইচ,এম,শহিদুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃবাগেরহাটের শরণখোলা মাতৃভাষা ডিগ্রী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষের চলতি দায়িত্বে থাকা মোঃ কামরুল ইসলাম রবিবার ২৬ জুলাই তার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগের প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময়ে ওই কলেজের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সহ অধিকাংশ শিক্ষক মিলানায়তনে উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেলন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে ২০০১ সালের ২ অক্টোবরে অধ্যক্ষের কক্ষে থাকা বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করার এক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক এবং কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও মানহানিকর।

কামরুল ইসলাম উক্ত প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আরও জানান, ২০০০ সাল থেকে কলেজে কর্মরত থাকা অবস্হায় পত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগের সাথে তিনি কখনও সম্পৃক্ত ছিলেন না। পত্রিকায় তথ্যদানকারী অফিস সহকারী রেজাউল ইসলাম নান্নু অর্থ আত্মসাৎ সহ দুর্নীতির দায়ে বর্তমানে সাময়িক বরখাস্তকৃত ওই কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অলিউর রহমানের একনিষ্ঠ লোক।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাবিহা ইয়াসমিন লিপি বলেন, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কর্তৃক রেখে যাওয়া  কলেজকে  সমুন্নত রাখার জন্য কলেজের অর্থনৈতিক দিকগুলো আরও স্বচ্ছ রাখতে অফিস সহকারী রেজাউল ইসলাম নান্নুকে বিধি মোতাবেক নিয়মিতভাবে সবকিছুর হিসাব রাখতে ও দেখাতে নির্দেশ দেন বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ফলে নান্নুর আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম বিধায় অফিস সহকারী নান্নু অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এহেন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ  তৈরি করেন। যা সম্পূর্ণ অবাস্তব।

এ সময়ে কলেজের শিক্ষক বিষ্ণুপদ দাস বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে পর্যায়ক্রমে উপজেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি মরহুম নান্না মিয়া আকনসহ ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রয়াত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন ও তার সহধর্মিণী এই কলেজের সভাপতি ছিলেন। বর্তমান সভাপতি ও ঢাকসু’র সাবেক ছাত্রনেতা ও ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল হক হায়দার, তিনিও প্রায় দেড় বছর এই কলেজের সভাপতি দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম জানান, কলেজের প্রতিষ্ঠতা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার তার অবসরকালীন কলেজের সিনিয়র শিক্ষক চন্দন কুমার কবুলাসীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিতে চাইলে তিনি সকল শিক্ষকদের উপস্থিতিতে পারিবারিক অসুবিধার কথা জানিয়ে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে কলেজের বর্তমান সভাপতি আব্দুল হক হায়দার করোনাকালীন ঢাকায় অবস্থান ও তার পারিবারিক অসুস্থতার কারণে এলাাকায় আসতে না পারায় পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মতে এবং সকল শিক্ষকদের অনুরোধক্রমে পরবর্তী সিনিয়র শিক্ষকের মধ্য হতে তাকে কলেজ পরিচালনার জন্য অধ্যক্ষের অতিরিক্ত চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়।

এ সময়ে উপস্থিত থাকা কলেজের সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক চন্দন কুমার কবুলাসী বলেন,কামরুল ইসলাম নিরলস,পরিশ্রমী। তিনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে সকল শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার প্রতি এহেন অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

স্থানীয় বিজ্ঞ মহলের ধারণা একটি  মহল বিগত দিনে কলেজ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। এই দুষ্কৃতকারীদের  ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে কলেজটিই ধবংস হয়ে যাবে বলে তারা মনে করছেন।

এ ব্যপারে মুঠোফোনে কলেজের প্রতিষ্ঠতা অধ্যক্ষ (অবসরপ্রাপ্ত) মো.নজরুল ইসলাম তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধুর ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করার মতো কাজ কামরুল ইসলাম করেন নাই এবং এরূপ কোনো ঘটনা এই কলেজে আদৌ কখনো ঘটেনি। কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশিত অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা ও  উদ্দেশ্যমূলক।

আনীত এরূপ  ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট ও তার সম্মান ক্ষুন্ন করা ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান কামরুল ইসলাম সহ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা শিক্ষকবৃন্দ।

এ ব্যাপারে অফিস সহকারী রেজাউল ইসলাম নান্নু’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোথাও অভিযোগ দেইনি । সাংবাদিকরা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি ২০০১ সালের ওই ঘটনা বলি।

কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুল হক হায়দার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের অবসরের সময়ে অবস্থার প্রেক্ষিতে কামরুল ইসলাম সাহেবকে চলতি দায়িত্বে দেয়া হয়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে গভর্নিং বডির সভা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

 

 

Attachments area
- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত