চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় নির্মাণকাজে রডের বদলে বাঁশের কাবারি ব্যবহার সংক্রান্ত দুদকের করা আলোচিত মামলায় অবশেষে চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছে আদালত। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সোমবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলামের আদালতে এ অভিযোগ গঠন করা হয়।চার আসামির উপস্থিতি এবং উভয়পক্ষের কৌঁসুলির যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি আল মুজাহিদ মিঠু এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, চার্জ গঠনের মধ্যদিয়ে দুদকের করা চাঞ্চল্যকর মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হলো।অভিযুক্ত চারজন হলেন- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয় ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মনির হোসাইন, প্রকল্প উপকরণ ক্রয় কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আয়ুব হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রধান কার্যালয়ের পরিকল্পনা, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আইসিটি উইংয়ের ভৌত অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুস সাত্তার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ জুন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার কলেজপাড়ায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ফাইটোসেনেটারি ক্যাপাসিটি শক্তিশালীকরণ প্রকল্পর অবকাঠামো নির্মাণকালে নির্ধারিত ডিজাইন লঙ্ঘন, ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার না করে রডের বদলে বাঁশের কাবারি ব্যবহার করে ছাদ ঢালাই করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় ছিল প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশ করে দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নিজেরা আর্থিক সুবিধা নিয়ে সরকারের দুই কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ২২৭ টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধনসহ সরকারের উন্নয়ন ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশের পর দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সিনিয়র মনিটর ও ইভালুয়েশন প্রকল্পের পরিচালক মেরিনা জেবুন্নাহার বাদী হয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি দুদক আইনে রূপান্তরিত হয়ে দুদক কুষ্টিয়া সমন্বিত কার্যালয়কে তদন্তভার ন্যাস্ত করা হয়। তদন্ত শেষ করে ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দেয় দুদক।
দুককের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল-মুজাহিদ বলেন, মামলাটির তদন্ত শেষ করে প্রায় আড়াই বছর আগে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে আনীত অভিযোগে জড়িত ও দোষীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনেও নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। একদিকে নির্ধারিত কোনো কোর্ট ছিল না, অন্যদিকে গেল বছর পুরোটাই করোনা সঙ্কটে আটকে ছিল বিচারিক প্রক্রিয়াটি। তবে খুব শিগগিরই মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্নের কাজটি শেষ হবে।