যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফজলুর রহমান (৬০) নামে এক রোগীর শরীরে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের পুরুষ পেয়িং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেয়ায় রোগীর অবস্থার অবনতি হয়েছে। তবে, তিনি এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। সন্ধ্যার পর এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা ব্লাড ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ করে।
তারা জানান, দু’দিন আগে যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মোতলেব মন্ডলের ছেলে ফজলুর রহমান অস্বাভাবিক রক্তশূন্যতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালের পুরুষ পেয়িং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভর্তির পর ডাক্তার রোগী দেখে জানান তার শরীরে তিন ব্যাগ রক্ত দিতে হবে। এরপর হাসপাতালের ব্লাডব্যাংকে ওই রোগীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে জানতে পারেন ‘ও’ পজিটিভ। ১৭ ফেব্রুয়ারি রোগীর স্বজনরা এক ব্যাগ ‘ও’ পজিটিভ রক্তের জোগাড় করে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে সংরক্ষণ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসক রোগী দেখে জানান জরুরি ভিক্তিতে তাকে একব্যাগ রক্ত দিতে হবে। দুপুর তিনটার দিকে রোগীর স্বজনরা ব্লাডব্যাংকে আসেন রক্ত নিতে। তখন ব্লাডব্যাংকে দায়িত্ব পালন করছিলেন রফিকুল ইসলাম নামে এক কর্মচারী। রোগীর ‘ও’ পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে রফিকুল ইসলাম ‘এ’ পজিটিভ গ্রুপের এক ব্যাগ রক্ত ধরিয়ে দেন। ওই ভুল গ্রুপের রক্ত নিয়ে রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সেবিকা শারমিন নাহারের কাছে দেন। এ সময় সেবিকা রোগীর ব্যবস্থাপত্র না দেখে রোগীর শরীরে ‘এ’ পজিভিট রক্ত পুশ করেন। এর পাঁচ মিনিট পর রোগী ছটফট শুরু করলে স্বজনরা সেবিকা শারমিন নাহারকে ডেকে আনেন। তখন সেবিকা শারমিন নাহার রোগীর ব্যবস্থাপত্রে দেখেন লেখা আছে ‘ও’ পজিটিভ রক্ত দিতে হবে। কিন্তু ব্লাডব্যাংক থেকে ‘এ’ পজিটিভ রক্ত সরবরাহ করা হয়েছে। তখন দ্রুত তিনি রোগীর শরীর থেকে রক্তের ব্যাগ খুলে ফেলেন।
এ বিষয়ে কর্মচারী রফিকুল ইসলাম জানান, ওই সময় ব্লাডব্যাংকে অনেক ভিড় ছিল। এ কারণে ভুল হয়েছে। রোগীকে ‘ও’ পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘এ’ পজিটিভ রক্ত দিয়ে ফেলেছি। তবে, রোগীর শরীরে রক্ত পুশ করার আগে ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সেবিকার উচিৎ ছিল রক্তের গ্রুপ ব্যবস্থাপত্রের সাথে মিলিয়ে নেয়া।
ওয়ার্ডের সেবিকা শারমিন নাহার জানান, ব্লাডব্যাগে অস্পষ্টভাবে রক্তের গ্রুপ লেখা ছিল। এ কারণে বোঝা যায়নি রক্তটি ‘ও’ না ‘এ’ পজিটিভ।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ জানান, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশেষ প্রতিনিধি
- Advertisement -