Wednesday, May 15, 2024

কুষ্টিয়ার রেজাউল হত্যার মাষ্টারমাইন্ড চেয়ারম্যান স্বপন

- Advertisement -

দুই দফা মিটিং করে কুষ্টিয়ার কাঠ ব্যবসায়ী রেজাউলকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাইরের এলাকা থেকে ভাড়া করা হয় তিন খুনিকে এবং জোগাড় করা হয় অস্ত্র। ঘটনার সময় নিজে উপস্থিতি থেকে রেজাউলের মৃত্যু দেখেন মূল পরিকল্পনাকারী আব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন মাষ্টার। এরপর ভাড়াটে খুনিদের অর্থ পরিশোধ করেন তিনি।রেজাউল হত্যা মামলায় আটক চেয়ারম্যান স্বপন মাস্টারের ঘনিষ্ট সহচর আনোয়ার আদালতে দেয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এভাবেই হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়েছেন।জবানবন্দিতে তিনি আরো বলেছেন, রেজাউলকে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে ২০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এরপর লাশ ফেলে তারা চলে আসে।কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মহাসিন হাসান গত ৩ নভেম্বর আসামি আনোয়ারের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আনোয়ার হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।আসামি আনোয়ার হোসেন মল্লিক পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি ৭-৮ বছর ধরে পশ্চিম আব্দালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপন মাস্টারের মোটরসাইকেল চালানোর কাজ করতেন।মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারি বিকেল ৫টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের দেড়িপাড়া গ্রামের মাঠে রেজাউল ইসলাম (৩২) নামে ওই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়। রেজাউল ইসলাম আব্দালপুর গ্রামের মসলেম হকের ছেলে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে আনোয়ারকে আটক করে।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি মোঃ আনোয়ার হোসেন মল্লিক। কৃষিকাজ করি। আমি দীর্ঘদিন যাবত পশ্চিম আব্দালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপন মাস্টারের মোটরসাইকেল চালানোর কাজ করি। আনুমানিক ৭-৮বছর হবে। আমি চেয়ারম্যানের সাথে রাতে ঘুম বাদে সব সময় থাকতাম। সে যেখানে যেতে চাইত সেখানে আমি নিয়ে যেতাম। প্রায় দুই বছর আগে আমাদের গ্রামে গ্রাম্য কাইজাতে চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপন মাষ্টারের ভাই ময়নুউদ্দিন বিশ্বাস নিহত হয়। কিছুদিন পর মঈনুদ্দিনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা হালিম জানতে পারে যে তার বাবাকে রেজাউল হত্যা করেছে। রেজাউলের বাড়ি টেকপাড়া (পশ্চিম আব্দালপুর)। হালিম পরবর্তীতে স্বপন চেয়ারম্যানের কাছে এসে তার পিতার হত্যাকারীর বিষয়ে জানায়। হালিম ওই সময় স্বপন চেয়ারম্যানকে বলে যে, চাচা আমার বাবাকে হত্যা করে রেজাউল বুক উচু করে ঘুরে বেড়াবে আর আমরা কিছু বলতে পারব না, আপনি কি করছেন?। চেয়ারম্যান তখন হালিমকে বলে, চুপ থাক আমি বিষয়টা দেখবো।চেয়ারম্যান এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আমাদের গ্রামের তিনজকে ডাকে। সকাল ১০টার দিকে ওনারা সবাই বিশ্বাস পাড়া মাদ্রাসার পাশে মুরগির ফার্মের মধ্যে গোপন মিটিং করে। ওই সময় রেজাউলকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এসময় রেজাউলকে বাইরের লোক দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। স্বপন চেয়ারম্যান খুনি ভাড়া করার জন্য পাশর্^বর্তী হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের সমীর চেয়ারম্যানের সহায়তা নেন। তিনি তিনজনকে ঠিক করে দেন।রেজাউলকে হত্যার আগের দিন আবারো মিটিং হয়। মিটিংয়ে সহিদুল নামে একজনকে বলা হয় সে যেন পরদিন সারাবেলা রেজাউলকে ফলো (নজর) করে। ভাড়াটে তিন খুনকে পরদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে লক্ষীপুর ছোট ব্রিজের পাশে থাকতে বলে। পরিকল্পনা মতো ঘটনার দিন তারা রেজাউলকে ধরে ১১মাইল মাঠে নিয়ে যায়। এরপর চেয়ারম্যান আমাকে (আনোয়ার) নিয়ে ১১মাইল মাঠে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি রেজাউলকে খুনিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাচ্ছে। রেজাউল ২০ মিনিটের মধ্যে মারা গেলে খুনিরা চেয়ারম্যান স্বপনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। এরপর আমি চেয়ারম্যানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। চেয়ারম্যানকে বাড়ি পৌছে দিয়ে আমি আমার বাড়িতে চলে আসি।এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপন বলেন, আনোয়ার হোসেন মল্লিকের সাথে আমার প্রায় তিন বছর কোন সম্পর্ক নেই। সে এখন আমার বিপক্ষ দলে যোগ দিয়েছে, তাই আমাকে ফাসাঁতে সে এখন বানোয়াট গল্প বলছে।

রাতদিন নিউজঃ

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত