Monday, May 20, 2024

ঝিকরগাছায় সন্তান সম্ভবা স্ত্রী কে পুড়িয়ে হত্যা,স্বামী আটক

- Advertisement -

ঝিকরগাছা প্রতিনিধিঃ যশোরের ঝিকরগাছায় চার মাসের সন্তানসম্ভবা এক নারী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিজের ঘরে তিনি অগ্নিদগ্ধ হন। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে খুলনায় এবং সেখান থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগে নিহত পুতুল দাবি করে গেছেন স্বামী প্রদীপ তার শরীরে আগুন দিয়েছিলেন। প্রদীপও আগুনে সামান্য দগ্ধ হয়েছেন। তিনি পুলিশি প্রহরায় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পুলিশ তাকে আটক দেখিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কাউনিয়া দাস পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রাতে প্রদীপ ও তার স্ত্রী পুতুলের ঝগড়া হচ্ছিল। এক পর্যায়ে তাদের চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখেন ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলছে। এসময় প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্যে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ঝগড়ার কারণে প্রদীপ তার স্ত্রীর শরীরে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।যমেক হাসপাতালের ডাক্তার আহমেদ তারেক শামস চৌধুরী জানান, রাত ৩টার দিকে দগ্ধ দম্পতিকে হাসপাতালে আনা হয়। পুতুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় রেফার করা হয়। প্রদীপের দু’টি হাত, চোয়াল ও মাথার চুল পুড়ে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।গৃহবধূ পুতুলের কাকা সঞ্জয় কুমার জানান, ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রথমে পুতুলকে যমেক হাসপাতালে এবং এখান থেকে খুলনা রেফার করা হয়। সেখান থেকে ঢাকায় রেফার করা হলে যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জের কাছে পুতুল মারা যান।সঞ্জয় দাবি করেন, মৃত্যুর আগে পুতুল তাকে বিস্তারিত বলে গেছেন।পুতুল জানিয়েছেন, রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে প্রদীপ তাকে বলেন, তুই আমাকে কত ভালোবাসিস তা গায়ে আগুন দিয়ে দেখা। এক পর্যায়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। সেই আগুনে পুড়ে তার মৃত্যু হয়।আহত প্রদীপ জানিয়েছেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে পুতুলের সাথে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে পুতুল ঘরের বাইরে যেতে চাইলে তিনি বাধা দেন এবং দরজা আটকে শুয়ে পড়েন। পুতুল ক্ষিপ্ত হয়ে পাশের ঘরে গিয়ে নিজের শরীরে কেরসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এতে তার দু’হাত পুড়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করেন।প্রদীপ আরও জানান, তিনি পুতুলকে খুব ভালোবাসেন। এক বছর আগে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে তিনি পুতুলকে বিয়ে করেছিলেন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিকরগাছা থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরাতো শুধু ছেলের বক্তব্য শুনেছি। তিনি দাবি করেছেন তার স্ত্রী নিজে গায়ে আগুন দিয়েছেন। আপাতাত প্রদীপকে আটক দেখিয়ে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।প্রসঙ্গত, প্রদীপ সনাতন ধর্ম গ্রহণের আগে মো. আলামিন হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত