সাতক্ষীরার কলারোয়ায় গলা কেটে দুই সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীসহ চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারের সময় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় চার মাসের ফুটফুটে শিশু মারিয়া। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় আলোড়ন। পাশাপাশি ফুটফুটে শিশুটিকে নিয়ে দেশবাসীর মনে জেগেছে নানা প্রশ্ন। মারিয়া কেমন আছে, কীভাবে আছে, কীভাবে খাওয়া-ধাওয়া করছ?
গত পাঁচদিন যাবৎ শিশু মারিয়া ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের কাছেই রয়েছে। তিনি তার দেখভাল করছেন। দূর দূরান্ত থেকে প্রতিদিন অসহায় শিশুটিকে দেখতে আসেন অসংখ্যা নারী। কোনো শাড়ি পরিহিত নারী দেখলেই মারিয়া তার মায়ের মুখ ভেবে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। সে কখনো কখনো হাসছে। কখনো হঠাৎ করে আঁতকে কেঁদে উঠে। একবার কান্না শুরু করলে তার কান্না থামানো অনেক কঠিন। অনেক সময় সে কান পেতে মানুষের কথাও শুনে।কাঁদতে কাঁদতে ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুন বলেন, দু্ই ছেলের মা আমি। আমার কোনো মেয়ে নেই। মারিয়াকে আমার সন্তান হিসেবে মেনে নিয়েছি। ডিসি মহোদয়ের সহযোগিতা পেলে মায়ের স্নেহ ভালবাসা দিয়ে আমি তাকে বড় করতে চাই। ডিসি এস এম মোস্তফা কামাল আইনগতভাবে মারিয়াকে লালন-পালনের দায়িত্ব দিলে আমি তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। তিনি আরো বলেন, দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলের একটি আট মাসের বাচ্চা আছে। মারিয়াকে পরিবারে আনার পর পরিবারের সবাই অনেক খুশি। তবে শিশু মারিয়ার শেষ ঠিকানা কী হবে জানি না। কলারোয়ার ইউএনও মৌসুমী জেরিন কান্ত বলেন, ডিসি মহোদয়ের নির্দেশে শিশুটিকে ইউপি সদস্যের হেফাজতে রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক খোঁজ নিয়ে খাদ্য ও পোশাক সরবরাহ করা ছাড়াও তার স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিও দেখছি।ডিসি এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, বাবা-মা, ভাই-বোন নৃশংস হত্যার শিকার হয়েছে। শিশু মারিয়ার কোনো অভিভাবক নেই। তার ভালোভাবে বেড়ে উঠার দায়িত্ব নিয়েছি। আপাতত তাকে ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের কাছে রেখেছি। তবে তার অভিভাবক নিতে চাইলে আইন অনুযায়ী তাদের কাছে দেয়া হবে।গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার কলারোয়ার হেলাতলা ইউপির খলসি গ্রামে দুই সন্তান ও তাদের বাবা-মার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ভাগ্যক্রমে নিহত দম্পতির চার মাসের সন্তান মারিয়া বেঁচে যায়। ওই দিন দুপুরে সাতক্ষীরার ডিসি এস এম মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে এসে শিশু মারিয়াকে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কোলে তুলে নেন। তখন তার দায়িত্বভারও গ্রহণ করে হেলাতলা ইউপির সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের কাছে রেখে যান।
অনলাইন ডেস্কঃ