Saturday, May 11, 2024

মার্কিন কিশোরীর অভিযোগেই আটক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা

- Advertisement -

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফি চক্রে জড়িত তিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। এক মার্কিন কিশোরীর অভিযোগের পর আট মাস তদন্ত করে তাদের আটক করা হয়।বিষয়টি  নিশ্চিত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ডিজিটাল ফরেনসিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার ইশতিয়াক আহমেদ।সিটিটিসির সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে ঢাকার এক তরুণের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে পরিচয় হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক কিশোরীর। এরপর বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে কৌশলে বাংলাদেশি তরুণ মার্কিন ওই কিশোরীর নগ্ন ছবি দিতে চাপাচাপি করেন। এক পর্যায়ে নিজের কিছু নগ্ন ছবি দেন ওই কিশোরী। পরে পর্নোগ্রাফি চক্রের বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই কিশোরী ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি ঢাকার সিটিটিসিকে জানান।সহকারী পুলিশ কমিশনার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, চক্রটি কৌশলে দেশি-বিদেশি শিশু ও কিশোরীদের ন্যুড ছবি এবং ভিডিও সংগ্রহ করে চাইল্ড পর্নো গ্রুপ ও ওয়েসবাইটগুলোতে সরবরাহ করতো। এরপর সারা দুনিয়ায় সাধারণত ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে চাইল্ড পর্নো ট্রেড হয়ে ছড়িয়ে পড়তো। তবে এই চক্রটি চাইল্ড পর্নো ট্রেড করে কী ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়েছে তার তদন্ত চলছে।

সিটিটিসি সূত্রে আরো জানা গেছে, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি মার্কিন এক কিশোরী ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের কাছে একটি অভিযোগ করার পাশাপাশি কিশোরী সাইবার ক্রাইম বিভাগকে তার একটি আইপি নম্বর দেয়। সাইবার ক্রাইম বিভাগের কর্মকর্তারা ওই আইপি নম্বরের সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে ওই আইপি নম্বরটির ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করে। এরপর তাদের ধরতে অভিযান শুরু হয়। এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর শাজাহানপুরের একটি বাসা থেকে আইপি নম্বর ব্যবহারকারী বোরহান নামে এক তরুণকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়।পরে তার দেয়া তথ্যানুযায়ী রামপুরা থানার রিয়াজবাগ থেকে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে এবং পল্লবী এলাকা থেকে অভিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে বোরহান একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছে। বাকি দুইজন অপর দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী।এর মধ্যে বোরহান গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথমে সে শিশু পর্নোগ্রাফির কথা অস্বীকার করে। বোরহানের ব্যবহৃত কম্পিউটার থেকে একটি ফোল্ডার উদ্ধার করা হয়, যেখানে ৪৫ দেশি-বিদেশি কিশোরীর নগ্ন ছবি পাওয়া যায়। যার মধ্যে তিন হাজার ৩১৬টি ফাইল ছিল। এর মধ্যে মার্কিন ওই কিশোরীর নামেও একটি ফোল্ডার ছিল। এছাড়া বোরহানের কম্পিউটার ঘেঁটে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়।জিজ্ঞাসাবাদে বোরহান সিটিসিকে জানিয়েছে, সে মূলত ইনস্টাগ্রামভিত্তিক বিভিন্ন চাইল্ড পর্নোগ্রাফি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ইনস্টাগ্রামে চাইল্ড পর্নো গ্রুপগুলোকে ‘শাটআউট’ নামে পরিচিত। এসব গ্রুপ থেকেই কিশোরীদের কীভাবে মোটিভেটেড করে নগ্ন ছবি সংগ্রহ করা যায়, সেসব কৌশল শিখেছে। পরে এই কৌশল প্রয়োগ করে কিশোরীদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে শিশু পর্নোগ্রাফি গ্রুপগুলোতে আপলোড করতো। বোরহানের আয়ত্ত্বে থাকা অবস্থায় তার ছয়টি ফেক ইনস্টাগ্রাম আইডি উদ্ধারের তথ্য জানিয়ে সিটিটিসির এক কর্মকর্তা বলেন, একাধিক ফেক মেইল আইডিও উদ্ধার করা হয়েছে।ইনস্টাগ্রামের ফেক আইডি বানিয়ে নিজেকে লেসবিয়ান নারী হিসেবে তুলে ধরে দেশ-বিদেশের কিশোরীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতো বোরহান। এক পর্যায়ে কিশোরীদের কাছ থেকে নগ্ন ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করে সেসব ভিডিও এবং ছবি আপলোড কর পর্নো ওয়েবসাইট ও গ্রুপে দিতো। উদ্ধার করা নথিপত্রে দেখা গেছে, কীভাবে অনলাইনে একজন কিশোরীকে নগ্ন ছবি সরবরাহ করা যায়, তার ১৩টি কৌশল উল্লেখ রয়েছে।এদিকে আটক বোরহান উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও অভি হোসেনকে রোববার আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারা।

অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত