নড়াইলে এক বৃদ্ধা মাকে দেড় বছর আগে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন নিজের গর্ভের ছেলে। যাকে তিনি আগলে রেখেছিলেন নিজের আচঁলে। ভাগ্যের নির্মমতায় আজ মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে নৌকার তলে। গত ১২ দিন বিভিন্ন দুয়ারে দুয়ারে ঘোরার পর । সর্বশেষ তিনি আশ্রয় নেন বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস.এম সুলতান কমপ্লেক্স সংলগ্ন সুলতান ঘাটের ওপর রাখা শিল্পী সুলতানের নৌকার নীচে। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তিনি সেখানেই আছেন। আর খাদ্য হিসাবে স্থানীয়রা যখন যে যা দান করছেন তা দিয়েই পেটের ক্ষিধা মেটাচ্ছেন।সূত্র জানায়, নড়াইল শহরের কুরিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৃত কালিপদ কুন্ডুর স্ত্রী মায়া রাণী কুন্ডুর (৮৫) দুই ছেলে দেব কুন্ডু (৫০) অপরজন উত্তম কুন্ডু (৪০)। উত্তম কয়েক বছর আগে বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকে শহরের রূপগঞ্জ বাজারের বাঁধাঘাট এলাকার ব্যবসায়ী দেব কুমার তার মাকে দেখাশোনা করতে থাকেন। তবে ছেলেও ছেলের বৌ এর লাথি ঝাটা তার নিত্যদিনের সঙ্গি হয়ে যায়। মায়া রাণী কুন্ডু বলেন, ”দেব তার সাথে প্রথমে দুরব্যবহার শুরু করে এবং খেতে-পরতে এবং তার বাড়িতে থাকতে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ সময় অমিত সাহা নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে কয়েক মাস তার বাড়িতে রাখেন। ”বৃদ্ধা মায়া রাণী কুন্ডু কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, “ দেড় বছরের বেশী সময় হয়ে গেলো ছেলে ও ছেলের বৌ তাকে খেতে পরতে ও থাকতে দেয় না। তার ৫শতক জমি ছিল। সে জায়গা কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করে ছেলে দেব নিয়ে নেয়। এরপর তারা দুর্ব্যবহার করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ঐ অবস্থায় কিছু দিন এখানে ওখানে ছিলেন। এখন আর কোথাও থাকার জায়গা নেই। তাই নৌকার তলে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।”এ ব্যাপারে মায়া রাণীর ছেলে দেব কুন্ডুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ মাকে রাখতে চান তিনি। কিন্তু তারা বৌ-এর সাথে তার বনিবনা হয়না। তার মা মিলে মিশে থাকতে পারেন না। তাই তার কিছুই করার নেই। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরাপ দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তার জানা নেই। একই সাথে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থধা গ্রহনের আশ্বাস দেন । সর্বশেষ খবরে জানা যায়, একজন সহকারি কমিশনার ঐ বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন।
বিশেষ প্রতিনিধি