Thursday, May 16, 2024

ইউএনও ওয়াহিদাকে হত্যা চেষ্টাঃ খুলনা বিভাগের ৫৯ ইউএনও’র নিরাপত্তায় ২৩৬ সশস্ত্র আনসার নিয়োগ

- Advertisement -

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখকে (৭০)হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা চজাড়দার করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে যশোরসহ খুলনা বিভাগের ৫৯টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় চারজন করে আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শুক্রবার দুশ’ ৩৬ জন সশস্ত্র আনসার নিয়োগ পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা থেকে চারজনের এই আনসার টিম প্রতিটি উপজেলায় ইউএনওদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন আনসার ও ভিডিপির খুলনা বিভাগীয় রেঞ্জ কমান্ডার মোল্লা আমজাদ হোসেন। বুধবার রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে সন্ত্রাসীরা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা চালায়। হামলায় ইউএনও ওয়াহিদা গুরুতর আহত হন। তাকে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে তার সফল অস্ত্রোপচারের কথা জানালেও কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বলছেন তার অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত না। ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর ইউএনওদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।নিরাপত্তায় আনসার মোতায়েনের বিষয়ে যশোর আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট ডক্টর লুৎফর রহমান বলেন, দেশের সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিরাপত্তায় চারজন সশস্ত্র আনসারের চারটি অস্ত্রসহ নিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা কমান্ড্যান্ট অস্ত্র গুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত পূর্বক আনসার নিয়োগের বিষয়টি সমন্বয় করছেন। যশোর জেলায় ইতিমধ্যে মোতায়েন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ইউএনওদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে কিনা বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে তিনি জানান।এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ডক্টর মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, দেশের সব জেলার মতো খুলনা বিভাগের সকল উপজেলায় ইউএনওদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতি উপজেলায় চারজন করে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। মাঠ প্রশাসনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সুরক্ষায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকল সুযোগ সুবিধা তাদের প্রদান করা হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে ঢুকে নিরাপত্তাপ্রহরীকে আটকে রেখে এ হামলা চালানো হয়। প্রচণ্ড আঘাতে ওয়াহিদার মাথার খুলির হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। এ ঘটনায় যুবলীগের বহিষ্কৃত সদস্য আসাদুলসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতার অন্যরা হলেন, সান্টু ও নবীরুল ইসলাম।শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রংপুরে র‌্যাব কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। র‌্যাব জানায়, আটককৃত আসাদুল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে- চুরির উদ্দেশেই তারা এ হামলা চালিয়েছে। তার সহযোগী হিসেবে অপর দুইজন ছিল। তবে র‌্যাব বলছে, এটা আসাদুলের বক্তব্য, র‌্যাবের নয়। র‌্যাবের বিস্তারিত জানাতে সময় লাগবে। র‌্যাব জানায় সেন্টু ও নবীরুল দু’জনই রঙ মিস্ত্রি। এদিকে ইউএনওকে হামলার ঘটনায় ঘোড়াঘাট যুবলীগ আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন ও সদস্য আসাদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে র‌্যাব। পরে এদের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জাহাঙ্গীরকে ছেড়ে দেয়া হয়। আর আসাদুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে ইউএনও হামলার দায় স্বীকার করে আসাদুল। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পরেই কেন্দ্রীয় যুবলীগের পক্ষ থেকে তাদের বহিষ্কার কর হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন—ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন ও সদস্য আসাদুল ইসলাম। শুক্রবার বিকালে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচারের পর ভোরেই জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে তাকে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

 

 

 

 

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত