Thursday, May 16, 2024

অন্যকে পিতা সাজিয়ে সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন সন্তানেরা, বৃদ্ধ বাবা-মা এখন পথের ভিক্ষারী!

- Advertisement -

অন্যকে পিতা সাজিয়ে সম্পত্তি জাল দলিল করে নিজেদের নামে লিখে নিয়েছেন সন্তানেরা। বৃদ্ধ বয়সে এসে এখন স্ত্রী নিয়ে ঘুরছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। অথচ একসময় তার সবই ছিলো। কিন্তু আজ সব হারিয়ে রাস্তার ফকিরে পরিণত হয়েছেন। ছেলেরা প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মহলের ধন্যা ধরেও কোনো লাভ পাননি। সর্বশেষ আদালতের দারস্থ হন তিনি। করোনার কবলে আদালত বন্ধের সুযোগ নিয়ে এখন মাথা গোজার ঠাইটাও কেড়ে নিতে চাচ্ছে পাষন্ড ছেলেরা। তাই সর্বশেষ যশোর পুলিশ সুপারের কাছে করুনা ভিক্ষা চেয়েছেন। লিখিত অভিযোগে শেষ জীবনে একটু মাথা গোজার ঠাই পেতে চেয়েছেন হতভাগা এই পিতা।
যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়ার আনসার আলী বিশ্বাস মঙ্গলবার তার পাঁচ ছেলের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ছেলেরা হলেন, কওছার আলী, হাসান আলী, কেসমত আলী, বাবর আলী ও ফিরোজ হোসেন। অভিযোগে আনসার আলী বিশ্বাস উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে কেসমত ও ফিরোজ অন্যকে পিতা সাজিয়ে ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি মাসে তার বেশ কিছু জমি নিজেদের নামে লিখে নিয়েছেন। যে দলিলে জমিটি জাল করা হয় তার নম্বর ৮৬০। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বছরেই তিনি দেওয়ানি আদালতে জাল দলিল রদের মামলা করেন। সেই মামলায় কেসমত আলী, ফিরোজ হোসেন ও সদর সাবরেজিস্ট্রারকেও বিবাদী করা হয়। যা বর্তমানে বিচারাধীন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, সম্প্রতি আনসার আলী বিশ্বাসের পাঁচ ছেলে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেন। এতে বাধা দেয়ায় গত ৫ জুলাই সন্তানরা স্ত্রীসহ তাকে মারপিট করতে উদ্যত হন। আশপাশের মানুষ এসে সে যাত্রায় তাদের রক্ষা করলেও তাদেরকে বাস্তভিটা থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছেন ছেলেরা। যে কারণে তিনি ও তার স্ত্রী চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আনসার আলী বিশ্বাস। উপরিউক্ত ব্যাপারে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিকার প্রার্থনা করেছেন।
এ বিষয়ে বৃদ্ধ আনছার আলী বিশ্বাস বলেন, তার পাঁচ ছেলে। বছর সাতের আগে তার স্ত্রী মারা যান। স্ত্রী মারা যাবার পর তিনি একা হয়ে পড়েন। খাওয়া বন্ধ করে দেয় ছেলে বউরা। রান্না থেকে শুরু করে নিজের সব কাজ নিজেরই করতে হয়। দেখভাল করার কোন লোক ছিল না তার। এক পর্যায়ে বছর দুই পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে ছেলেদের ষড়যন্ত্রর মাত্রা আরো বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, আমার এত সম্পদ। সব ছেলেদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছি। শুধু নিজের চলার জন্য একটু সম্পদ নামে রেখেছিলাম। তাও ছেলেরা জাল কাগজ করে নিজেদের নামে করে নিয়েছে। বসুন্দিয়া বাজারে একটি মার্কেট আছে, ওই মার্কেটের ভাড়া তুলে আমার সংসার চলতো। প্রতি মাসে ৫ তারিখে দোকান ভাড়া পেতেন। তা দিয়ে সংসার চালাতেন। ছেলেরা দোকানের ভাড়াটের হুমকি দিয়ে ভাড়া বন্ধ করে দিয়েছে। এখন স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে নিয়ে অধিকাংশ সময়ই তার না খেয়ে থাকতে হয়। মাথা গোজার ঠাইটাও আজ হারাতে বসেছেন তিনি। সর্বশেষ তিনি বলেন, বড় আশা করে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। তাতেও যদি কোনো ফল না আসে তাহলে আত্মহত্যা ছাড়া তার আর কোনো উপায় থাকবেনা।

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত