Thursday, May 16, 2024

দেড় বছর পর আলোর মুখ দেখলেন “আলোমতি”

- Advertisement -

দেড় বছর আগে ফরিদুপর থেকে নিখোঁজ হন মানসিক ভারসাম্যহীন আলোমতি (৪০)। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও পরিবার তার সন্ধান না পেয়ে একপর্যায়  ভেবেই নিয়েছিলেন আলোমতি হয়তো বেঁচে নেই। আর কখনোই সে ফিরে আসবেনা। কিন্তু ভাগ্য তাকে আবার তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিলো। শেখহাটীর তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের পরিচিত মুখ সালাহ উদ্দীন সাগরের সহানুভবতায় নিজের পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন আলোমতি।
এ বিষয়ে আলোমতির ভাই নুরু শেখ জানান, আলোমতি চার সন্তানের জননী। স্বামী তাকে ছেড়ে অন্যএকজনকে বিয়ে করে সংসার করছে। যাবার সময় পুত্রসন্তানকে সে নিয়ে যায়। বাকী তিনটি মেয়ের বোঝা কাঁধে করে কষ্টের জীবন কাটছিলো আলোমতির৷মেয়েদের সুখের কথা চিন্তা করে নতুন করে সংসারের স্বপ্ন তিনি আর দেখেননি। দিনমজুর ভাই নুরু শেখের বাড়ীতে থাকতেন তিনি। সেখানে থেকেই নুরু শেখ ও প্রতিবেশীদের সহায়তায় তিনটি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এরপর মানসিক একাকিত্ব জেঁকেবসে আলোমতির মনে। ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে আলোমতি। প্রায়ই এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতেন পাগলীর বেশে। এখান থেকে সেখানথেকে পরিবারের লোকজন ধরে বাড়ি ফিরিয়ে আনতেন। কিন্তু দেড় বছর আগে ছোট মেয়ে রত্নার বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন আলোমতি। নিজ গ্রাম খামিনারবাগ থেকে ভাঙা চৌরাস্তায় এসে নিখোঁজ হন এরপর থেকে আর কোথাও তার সন্ধান মেলেনি তার। বুধবার তাকে ফিরে পান। পুলিশ তার বোনকে তাদের হাতে তুলে দেন।
এ বিষয়ে সন্ধানদাতা সালাহ উদ্দীন সাগর বলেন, গত মঙ্গলবার (২৩জুন) সকালে তরফ নওয়াপাড়া মোড়ের শেখ ফার্মেসীর সামনে তাকে দেখতে পান। পাগলীর বেশে তাকে দেখে স্থানীয়রা কেউ রুটিকলা কেউবা আবার টাকা পয়সা তার হাতে দেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল পরে রাত হলেও তিনি ওখানেই অবস্থান করেন। সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও তিনি সেভাবেই বসে থাকেন। পরে সালাহ উদ্দিনের মনে কৌতুহলের জন্ম নেয়। তিনি ওই মহিলার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভারসাম্যহীন ওই মহিলার মুখে কোনো কথা ছিলোনা। এক পর্যায় তিনি বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর ও চেয়ারম্যানকে জানান। তাদের কাছথেকেও তেমন সাড়া পায়নি সাগর। এরপর উপশহর পুলিশ ফাঁড়িকে বিষয়টি জানান। পরে ফাঁড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এক পর্যায় তার মুখে কথা ফোঁটে। তিনি জানান তার বাড়ী ফরিদপুর খামিনারবাগ। তবে আর কিছুই বলতে পারে না আলোমতি। এরপর সালাউদ্দীন প্রথমে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় কথা বলেন। সেখান থেকে ঘাড়ুয়া ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করেন। পরে খামিনারবাগ গ্রামের মেম্বরের সাথে যোগাযোগ করে আলোমতির পরিবারের সন্ধান পান। বুধবার আলোমতিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে উপশহর ফাঁড়ি ইনচার্জ এম এ লতিফ জানান, স্থানীয় যুবক সালাউদ্দীন তাকে মোবাইলে বিষয়টি জানায়। পরে মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। বুধবার পরিবারের লোকজন আসলে তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়।

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত