Saturday, December 13, 2025

অর্থনীতি টালমাটাল, তবুও কোটিপতির সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে!

দেশের ব্যাংকিং খাতে কোটি টাকা বা তার বেশি আমানতধারী হিসাবের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার বেশি আমানত থাকা হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭০টি। যা তিন মাস আগের জুন প্রান্তিকের তুলনায় আরও ৭৩৪টি বেশি।

ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের ওপর আর্থিক চাপ বেড়েছে। সংসারের ব্যয় সামলাতে অনেকেই সঞ্চয় ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে ছোট অঙ্কের আমানতে কমতির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিপরীতে সমাজের এক শ্রেণির আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় বৃহৎ অঙ্কের নতুন আমানতের বেশির ভাগই যাচ্ছে বিত্তশালী ব্যক্তি ও বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, কোটি টাকার হিসাব মানেই কেবল ব্যক্তিখাতের কোটিপতি নয়। এসব হিসাবে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সংস্থা এবং একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একাধিক হিসাবও অন্তর্ভুক্ত থাকে। ফলে হিসাবের সংখ্যা দিয়ে প্রকৃত কোটিপতির সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০টি। জুন শেষে এ সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টি। অর্থাৎ তিন মাসে হিসাব বেড়েছে ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ২৯টি।

তবে কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা বাড়লেও— এসব হিসাবে মোট জমা অর্থ কমেছে। চলতি বছরের জুন শেষে কোটি টাকার হিসাবগুলোতে জমা ছিল ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে এই পরিমাণ নেমে আসে ৮ লাখ ২১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকায়। তিন মাসে এসব হিসাবে জমা অর্থ কমেছে প্রায় ৫৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বড় অঙ্কের সঞ্চয়কারীরা বিনিয়োগ, ঋণ পরিশোধ বা অন্যান্য আর্থিক সিদ্ধান্তের কারণে অর্থ তুলে নিতে পারেন। তবে ছোট অঙ্কের আমানতের ধারাবাহিক হ্রাস দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর